স্টাফ রিপোর্টার :: আজ ১৯ জুন ‘বিশ্ব বাবা দিবস’। যদিও বাবাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাতে কোনো বিশেষ সময়ের প্রয়োজন হয় না, তবুও আজ বাবা দিবসে বিশ্বের সব বাবার প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
আসলে মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও যে তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল- এটি বোঝানোর জন্যই বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিক থেকে পিতৃ দিবস পালন শুরু হয়। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকে যার শুরু।
ধারণা করা হয়, ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই আমেরিকার পশ্চিম ভার্জেনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায় এ দিনটি প্রথম পালিত হয়। আবার সনোরা স্মার্ট ডড নামের ওয়াশিংটনের এক ভদ্রমহিলার মাথায়ও বাবা দিবসের আইডিয়া আসে। তার মনে হয়, যেখানে মাকে নিয়ে দিবস পালিত হচ্ছে, তাহলে বাবাদের নিয়েও তো কিছু করা দরকার। ডড তার বাবাকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি নিজ উদ্যোগেই ১৯ জুন ১৯১০ সাল থেকে বাবা দিবস পালন শুরু করেন। ১৯১৩ সালে আমেরিকান সংসদে পিতৃ দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণা করতে একটা বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯২৪ সালে তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ বিলটিতে পূর্ণ সমর্থন দেন। অবশেষে ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন বাবা দিবসকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন।
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে জুন মাসের তৃতীয় রোববার পিতৃ দিবস হিসেবে পালিত হয়। এভাবেই বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই বাবার প্রতি অসীম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যমে পালিত হয় দিবসটি।
যদিও আগের দিনে বাবার সাথে সন্তানের সম্পর্ক ছিল খানিকটা দূরত্ব, খানিকটা সঙ্কোচ ও খানিকটা ভীতি মেশানো শ্রদ্ধা। তবে সেই অবস্থা এখন আর নেই বললেই চলে। এখনকার সময়ে অনেক বাবাই সন্তানদের বন্ধুর মতো, একদম কাছের মানুষ। স্নেহশীল। কর্তব্যপরায়ণ।
ডাক যাই হোক না কেন, রক্তের সম্পর্ক বদলায় না। বদলায় না এই ডাকের আবেগও। এই ডাকের মধ্যেই জড়িয়ে থাকে পৃথিবীর সব আবেগ ও ভালোবাসা।
আসুন এই ‘বাবা দিবসে’ আমারা সবাই বাবাকে বলি, ‘বাবা, খুব ভালোবাসি তোমাকে, যেভাবে পাশে আছো সেভাবেই থেকো চিরদিন’।
আর যার বাবা বেঁচে নেই তারাও একবার হলেও ভাবুন বাবাকে। বাবার প্রতি এত ভালোবাসা কিভাবে প্রদর্শন করব? কাকে সেই প্রিয় ‘বাবা’ বলে ডাকবে? অগণিত ভাগ্যবিড়ম্বিতের এ আক্ষেপ অন্তরের, এই জ্বালা চিরকালের।
জীবন চিরায়ত বহমান। সব হারানো কিংবা শোক-তাপের ঊর্ধ্বেও জীবন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এ সত্যটাই চিরন্তন। ভালোবাসার বহতার কথা বলেছেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি তার বাবার শেষ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রার্থনায় বলেছিলেন, ‘বাবা আলোকের ন্যায়, সমীরণের ন্যায়, তাহা শিশুকাল হইতে আমাদিগকে নিয়ত রা করিয়াছে, কিন্তু তাহার মূল্য কেহ কখনো চাহে নাই!’