ডেস্ক রিপোর্ট: ২৩৯ জন আরোহী নিয়ে এক সপ্তাহের বেশি সময় নিখোঁজ মালয়েশীয় বিমানটির যোগাযোগ সিস্টেম ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। নতুন এ তথ্য উদ্‌ঘাটিত হওয়ার পর বিমানটি ছিনতাই হওয়ার আশঙ্কা সামনে এসেছে।

এদিকে, বিমানটির পাইলটের বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে মালয়েশিয়ার পুলিশ। তারা পাইলটের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্যাটেলাইট এবং রাডারের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূলে পৌঁছানোর পর ইচ্ছাকৃতভাবে বিমানটির যোগাযোগ সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পরবর্তী সাত ঘণ্টা বিমানটি আকাশে উড়ে থাকতে পারে।

বিমানটির ছিনতাই হওয়ার আশঙ্কার প্রশ্নে নাজিব রাজাক কোনো মন্তব্য না করে বলেন, ‘সব সম্ভাবনা’র বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, একটি সামরিক রাডারে প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর বিমানটি দিক পরিবর্তন করে এবং সেটি মালয়েশিয়ার দিকে ফিরে আসছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সাত ঘণ্টা পর এ বিমানের সিগন্যাল একটি স্যাটেলাইটে ধরা পড়ে। যদিও স্যাটেলাইটটি বিমানটির অবস্থান সম্পর্কে যথার্থ তথ্য দিতে পারেনি।

নাজিব রাজাক বলেন, স্যাটেলাইটে পাওয়া এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কাজাখস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের সীমান্ত থেকে থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলজুড়ে এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ অংশে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।

এ তথ্যের পর অনুসন্ধান অভিযানে ‘নতুন অধ্যায়’ যুক্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর এ সংবাদ সম্মেলনের পর নিখোঁজ আরোহীদের আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে অনিশ্চয়তা আরো বাড়ল। সংবাদ সম্মেলনের পর এক চীনা আরোহীর স্বজন বলেন, ‘এর ফলে আমাদের প্রিয় মানুষটির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আরো প্রবল হলো।’

নিখোঁজ বিমানটির অনুসন্ধানে এখনো পর্যন্ত ১৪টি দেশের ৪৩টি জাহাজ এবং ৫৮টি উড়োজাহাজ যুক্ত হয়েছে।

এদিকে, বিমানের পাইলট জাহিরি আহমেদ সালেহের (৫৩) কুয়ালালামপুরের বাসায় তল্লাশি চালায় মালয়েশিয়ার পুলিশ। মালয়েশিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, পাইলটের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করা হয়েছে জাহিরি আহমেদ সালেহের মানসিক সমস্যা ছিল কি না।

মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী আহমেদ জোওহারি জানান, বিমানটিতে ১৪টি দেশের নাগরিক ছিলেন। এর মধ্যে ১৫২ জন চীনা, ৩৮ জন মালয়েশীয়, ১২ জন ইন্দোনেশীয় এবং অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ছিলেন ছয়জন।

মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের অপারেশন নিয়ন্ত্রণ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ শাহরুজি বলেন, ‘যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগ মুহূর্তে বিমানটি ৩৫ হাজার ফুট উচ্চতায় ছিল। পাইলট কোনো সমস্যার কথা আমাদের জানাননি।’

গত ৭ মার্চ মালয়েশিয়ার সময় রাত পৌনে ১টার দিকে বোয়িং-৭৭৭ বিমানটি ২৩৯ জন আরোহী নিয়ে বেইজিংয়ের উদ্দেশে কুয়ালালামপুর থেকে যাত্রা করে। এর এক ঘণ্টা পর ভিয়েতনামের আকাশসীমায় বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here