unnamedমোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে গাছের ডালপালা কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রুহুল আমীন (২৪) নামের এক বিদ্যুৎ শ্রমিক নিহত হয়েছে। রুহুল সরাইল সদর ইউনিয়নের জিল্লুকদার পাড়ার সাবেক বিদ্যুৎ কর্মচারী মৃত রওশন আলীর ছেলে।

গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার রসুলপুর এলাকায় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শাটডাউন নিয়ে কাজ শুরু করার পরও এ দূর্ঘটনা ঘটেেেছ। তাই রুহুলের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।

এ হত্যাকান্ডের সাথে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনের সংশ্লিষ্টতার কথা তারা চিৎকার করে বলছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত রুহুলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায় রুহুল দীর্ঘদিন ধরে সরাইল বিদ্যুৎ (পিডিবি) অফিসের সহায়তাকারী হিসাবে কাজ করছে।

উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের তারের উপর পড়ে থাকা গাছের ডালপালা কাটা লাইনের সমস্যা হলে জরুরী ভাবে মেরামত করা সহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করত সে। তার মত আরো অনেক শ্রমিক ওই অফিসে কাজ করছে।

তারা কেউই পিডিবির স্থায়ী বেতন ভুক্ত কর্মচারী নন। তাদেরকে অফিস থেকে দৈনিক অথবা সাপ্তাহিক হিসাব করে সামান্য টাকা দিয়ে থাকেন। গতকাল সকালে রুহুল কয়েকজন কর্মচারী সহ সরাইল-অরুয়াইল সড়কের চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর এলাকায় গাছের ডাল কাটতে যায়। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শাটডাউন নিয়ে গাছের ডালপালা কাটার কাজ শেষ করে।

পরে সে এসটি লাইনের জাম্পার লাগানোর সময় চোখের পলকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে রুহুলের নিথর দেহ উপর থেকে মাটিতে পড়ে। তাকে দ্রুত সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।

তখন রুহুলের মৃত দেহ নিয়ে যাওয়া হয় সরাইল নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে। ততক্ষণে ফাঁকা হয়ে যায় ওই দফতর। কর্মকর্তা কর্মচারী শুন্য ওই দফতরে মূহুর্তের মধ্যে হাজারো মানুষের ভীড় জমে।

রুহুলের স্বজনদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠে সেখানকার পরিবেশ। সাধারন মানুষের উত্তেজনা আঁচ করতে পেরে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে অবস্থান নেন।

নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষসহ সহ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর  কক্ষে খাঁ খাঁ করছে শুধু চেয়ার টেবিল। অনেকের কক্ষে ঝুলছে তালা। নিহত রুহুলের সহোদর বড় ভাই আল-আমীন (৩০)চাচাত ভাই জাহিদ হাসান নোমান (২৯) সহ তার পরিবারের লোকজন অভিযোগ করে বলেন এটা কোন দূর্ঘটনা নয়।

শাটডাউন নেওয়ার পরও বিদ্যুৎ থাকবে কেন  রুহুলকে শত্রতাবশতঃ পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে অফিসের অনেক লোক জড়িত। আমরা তাদের বিচার চাই।

পুলিশ রুহুলের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে সরাইল পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরন) সুব্রত রায় মুঠোফোনে শাটডাউন নিয়ে কাজ করার কথা স্বীকার করে বলেন আমাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।

সে আমাদের লোক। আমাদের কারো সাথে তার কোন শত্রতা নেই। শাটডাউন নেওয়ার পরও এমন ঘটনা কেন ঘটল তা খতিয়ে দেখছি। এতটুকু বলেই তিনি লাইন কেটে দেন। সরাইল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা এস আই শহিদুল ইসলাম বলেন যেহেতু পরিবারের লোকজন হত্যার অভিযোগ করছে। তাই নিহত রুহুলের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here