সুলতানা কামালষ্টাফ রিপোর্টার :: মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘সুন্দরবনের প্রতি সরকারের অবহেলামূলক মনোভাব প্রবলভাবে বেমানান। এই অবহেলামূলক আচরণ দেখেই সম্ভাবত বনখেকোদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ অত্যাচার বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা বিদ্যুৎও চাই, কিন্তু অক্ষত সুন্দরবনও চাই।’
রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মঙ্গলবার শোভাযাত্রাপূর্ব সমাবেশে সুলতানা কামাল এ কথা বলেন।

১৪ ফেব্রুয়ারি ‘সুন্দরবন দিবস’ উপলক্ষে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও এর আওতাধীন ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠন এই সমাবেশের আয়োজন করে। দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য ‘সর্বোচ্চ ধ্বংসাত্মক সংকটের মুখে সুন্দরবন! সুন্দরবন রক্ষা করুন, প্রকৃতি বাঁচান, দেশ বাঁচান!’

সকাল ১০টায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদী গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশ। এরপর সমাবেশে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, সুন্দরবন প্রশ্নে সরকারের নির্লিপ্ততা ও রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়নের দৃঢ়তায় দেশবাসী উদ্বিগ্ন। জনগণ আবার একত্র হবে, সোচ্চার হবে সুন্দরবন বাঁচাতে।

সমাবেশ থেকে সুন্দরবনের ভেতরে ও এর আশপাশে নির্মাণাধীন সব সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প ও স্থাপনা নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ করা, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে নৌ চলাচল হ্রাস করা, সেখানকার জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা ও জীবিকার ব্যবস্থা করাসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়।

সমাবেশ শেষে বেলা ১১টার দিকে শোভাযাত্রা বের হয়। দোয়েল চত্বর হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক (বাপা) মো. আবদুল মতিন বলেন, সুন্দরবন ধ্বংসে একের পর এক প্রকল্প শুরু হয়েছে। সুন্দরবন রক্ষা করতে হবে- এটা দেশের সবাই বুঝতে পারছে, শুধু সরকার এখনো বুঝতে পারছে না।
কর্মসূচিতে সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাপা’র যুগ্ম-সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাপা, রূপান্তর ও কতিপয় স্থানীয় সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে খুলনায় একটি সুন্দরবন সম্মেলনের সফল আয়োজন করা হয়েছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ। ওই সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবের ভিত্তিতেই বাপা সুন্দরবনবিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আর এই দিনটি (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রতি বছরই ঢাকায় ও খুলনাসহ সারাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে বেসরকারি পর্যায়ে পালিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও ঢাকায় ও সারাদেশে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here