বিদ্যুতের আলোএনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি:: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বান্দরবানের দুর্গম থানচি উপজেলায় নতুন বিদ্যায়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন। দুপুর দেড়টায় জেলা প্রশাসক দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সে বিদ্যুত প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, সেনা রিজিয়ন কমান্ডার মুহাম্মদ যোবায়ের সালেহীন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিব কুমার রায়, জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গম এলাকা থানচি আলোকিত হয়ে উঠেছে। তবে উদ্বোধনের আগেই এলাকার মানুষ বিদ্যুত সংযোগ নিয়েছেন। বিদ্যুতের সুফলভোগ করছেন ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের আলোতে আলোকিত হওয়ায় দুর্গম এলাকার মানুষেরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।

পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের এপ্রিলে থানচিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ শুরু হয়। আর শেষ হয় গত বছরের জুনে। একই বছরের আগস্টের দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ পায় থানচির মানুষ। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ১২ হাজার মানুষ বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আসবে। ক্রমান্বয়ে সবমানুষকে বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আনা হবে। প্রায় ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৫ কিলোমিটার ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইন, ১১ কেভির ২৮ কিলোমিটার সরবরাহ লাইন ও ১৭ কিলোমিটার বিতরণ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ১৭টি ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে। ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বলীপাড়া বিজিবি’র উপকেনন্দ্র (সাব ষ্টেশন) থেকে ৫ হাজার পরিবারকে আবাসিক সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে। জেলা শহর থেকে ওয়াই জংশনের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। ওয়াই জংশনের সাব ষ্টেশন থেকে একটি বিদ্যুতের লাইন গেছে রুমা উপজেলায়। আর একটি চিম্বুক পর্যন্ত। নতুন প্রকল্পের আওতায় চিম্বুক থেকে বলীপাড়া পর্যন্ত নতুন সাব ষ্টেশন করা হয়েছে।

পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মিজানুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, অগ্রসর এলাকার মত বিদ্যুত পাবেন থানচির মানুষ। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ফলে জীবনমান পাল্টে যাবে এখানকার মানুষের। কৃষি, পর্যটন শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটবে বিদ্যুত সরবরাহের কারণে। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল আর নষ্ট হবে না।

থানচি ইউপি চেয়ারম্যান মাংসার ম্রো বলেন, চারটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত থানচি উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও এখানকার মানুষ ছিল অন্ধকারে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কিছু সংখ্যক মানুষ সৌর বিদ্যুত ব্যবহার করলেও বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ছিল বিদ্যুত সুবিধার বাইরে। এখন বিদ্যুত সুবিধা পাওয়ায় এলাকার মানুষের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন ঘটবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here