বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের মেয়াদেই আলোচিত বিডিআরে বিদ্রোহের ঘটনার বিচারকাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকেলে সেনাকুঞ্জে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা বিকেলে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে তিন বাহিনীর প্রধান ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসাররা তাকে স্বাগত জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও মনোবল বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন করে শান্তিকালীন মেডেল প্রবর্তনের বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন আছে।

সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের জন্য সিএসডি সুবিধা, সুলভ মূল্যে বিপণন ও ব্যাংকিং সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ও সরকার বিবেচনা করছে বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, অর্থমন্ত্রী যদি রাজি হন এবং আমরা যখনই অর্থের সংস্থান করতে পারব তখনই আমরা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য উন্নয়নমূলক কাজগুলো করব।

বিডিআর বিদ্রোহের বিচার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিদ্রোহের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বাহিনীর নিজস্ব আইনে বিচার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এ বিদ্রোহের ঘটনায় চার্জশিটে আটশ’র বেশি অভিযুক্ত রয়েছে। এদের বিচার কার্যক্রম চলছে। আমরা আশা করছি, এ সরকারের আমলেই বিচার সম্পন্ন হবে।

তিনি আরো বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম করে গড়ে তুলতে তার সরকার সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর সদস্যদের দেশে ও বিদেশে উন্নততর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে; আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন যুদ্ধসরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ এবং আর্মড ফোর্সেস নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। বিমান বাহিনীর জন্য আরো আটটি মিগ-২৯ ক্রয় এবং প্রশিক্ষণ বিমান ও হেলিকপ্টার সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া বিমানবাহিনীতে নতুন চারটি এফটি-৭বি জঙ্গি বিমান সংযোজন করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঘাঁটি ‘ঈসা খাঁ’ উদ্বোধন করেন। তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৎকালীন যুগোশ্লাভিয়া থেকে নৌবাহিনীর জন্য দুটি জাহাজ সংগ্রহ করা হয়। প্রায় ৩৭ বছর পর আজো সেগুলো চালু রয়েছে।

তিনি জানান, নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের বিশাল সমুদ্র এলাকার সার্ভিল্যান্স এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেভাল এভিয়েশনে ইতিমধ্যে দুটি মেরিটাইম হেলিকপ্টার সংযোজন করা হয়েছে। দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট সংযোজনের অপক্ষায় আছে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, মন্ত্রীরা, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, সংসদ সদস্যরা, মুক্তিযোদ্ধা, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধান, কূটনীতিকরা, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও তাদের পত্নীগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, সশস্ত্র বাহিনীর যেসব সদস্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তারাসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে ১৯৭১ সালের এই দিনে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অকুতোভয় সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণের সূচনা করে। ফলে দখলদার বাহিনী আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। এই প্রচেষ্টার ফলে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় আসে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here