ষ্টাফ রিপোর্টার :: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অযথা ব্যয় কমানোর স্বার্থে বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নিয়ে এরপর নিজেই হেলিকপ্টারে চড়ে অফিস করছেন—এমন খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা আর বিতর্কের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা অবশ্য নানা যুক্তি দিয়ে বিষয়টিকে বৈধতা দেওয়া চেষ্টা করছেন।

নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ সম্পন্ন করার পর প্রধানমন্ত্রী ইমরান ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের বিমানের প্রথম শ্রেণিতে চড়া বন্ধ করা। এ ঘোষণার আওতায় নিজেকেও রেখেছেন ইমরান।

তিনি জানিয়েছেন, বিদেশ সফরে তিনি কোনো বিশেষ বিমান ব্যবহার করবেন না, তবে অভ্যন্তরীণ কাজে সরকারি বিমান ব্যবহার করবেন।

ইমরান কৃচ্ছ সাধনের এমন ঘোষণা দিলেও জানা গেছে, তিনি ও তাঁর স্ত্রী বুশরা ইমরান তাঁদের ব্যক্তিগত বাসভবন বানিগালা থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাওয়া-আসার জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন।

এ নিয়ে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সমালোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর ওপর আবার গত সোমবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজদার সপরিবারে তাঁর এক বন্ধুর বাবার মৃত্যুতে বন্ধুকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য হেলিকপ্টারে চড়ে ওই ব্যক্তির কাছে যান।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার ব্যবহারের ছবিসহ খবর ছড়িয়ে পড়া আর সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের হেলিকপ্টারে চড়ে অফিস করার খবর—দুটি নিয়ে সমালোচক ও বিরোধী শিবির বাক্যবাণ ছুড়তে ব্যস্ত।

ইমরানের দলের লোকজন নানা ব্যাখ্যা দিয়ে বিষয়টিকে হালকা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। খাইবার পাখতুনখোয়ার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা মুহাম্মদ আলী খান টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘বানিগালা থেকে প্রধানমন্ত্রী ভবনে হেলিকপ্টারে চড়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের যাতায়াত নিয়ে যারা অযথা সমালোচনা করছে, তাদের অবশ্যই জানা দরকার—১. নিরাপত্তার প্রয়োজনে পাঁচ-সাতটি গাড়ি ব্যবহারের পরিবর্তে হেলিকপ্টারে তিন মিনিটের যাত্রায় অধিকতর জ্বালানিসাশ্রয়ের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া বিচক্ষণ কাজ, ২. অধিকতর নিরাপদ, ৩. কোনো ট্রাফিক জ্যামে পড়তে হয় না।’

এ ছাড়া তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় নেতার হেলিকপ্টার ব্যবহারের পক্ষে সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করেন। সাংবাদিকরা মাত্র কয়েক কিলোমিটার পথ যাতায়াতের জন্য ইমরানের হেকিলপ্টার ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের জন্য আমাদের হাতে দুটি রাস্তা আছে; প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর ব্যবহার, যার কারণে ট্রাফিক জ্যাম হতে পারে অথবা হেলিকপ্টার ব্যবহার।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রায়ই হেলিকপ্টার ব্যবহার আদতে ভিআইপি সংস্কৃতির পর্যায়ে পড়ে—এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আসলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় হেলিকপ্টার ব্যবহার করেন এবং চার মিনিটে বাড়ি পৌঁছে যান।’

পিটিআই প্রধান ইমরানের হেলিকপ্টার ব্যবহারকে শক্ত ভিত্তি দিতে গিয়ে ফাওয়াদ এ কথাও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ তাঁর খাবার আনা-নেওয়ার জন্যও হেলিকপ্টার ব্যবহার করতেন। সূত্র : ডন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here