জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: লক্ষ্মীপুরে বাল্যবিয়েতে রাজি না হওয়ায় মারধর করায় ইয়াসমিন আক্তার (১৫) নামের এক কিশোরী বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে। ইয়াসমিন সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে ও সৈয়দপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। বুধবার সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানান, ইয়াসমিন গত বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়। এরজন্য সে একই শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো। এরমধ্যে বাবা ইসমাইল ও মা লাকী বেগম তাকে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। একপর্যায়ে ফুফাতো ভাই কুয়েত প্রবাসী রাশেদের (৩৫) সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে চাপ সৃষ্টি করা হয়।
রাশেদ উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের সমাষপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে। তিনি এরআগেও বিয়ে করেছেন। প্রায় ৩ বছর আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
সবকিছু জেনে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় রোববার রাতে ইয়াসমিনকে তার মা-বাবা মারধর করেন। এতে অভিমান করে পরদিন সোমবার সকালে সে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরিবারের লোকজন দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার তার মৃত্যু হয়। পরে দুপুরে মরদেহ দত্তপাড়ার সৈয়দপুরের বাড়িতে আনা হয়।
খবর পেয়ে বিকেলে পুলিশ সেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি আহসানুল কবির রিপন জানান, বাল্যবিয়ে দেওয়ার জন্য ওই ছাত্রীকে পরিবারের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয়। এতে অভিমান করে সে বিষপানে আত্মহত্যা করে।
দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে উপ-পরিদর্শক মজিবুর রহমান জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত করে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।