বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)ষ্টাফ রিপোর্টার :: সোহরাওয়ার্দীতে ঐতিহাসিক একাদশ কংগ্রেসের উদ্বোধনী সমাবেশে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। একইসঙ্গে দলটি দেশের রাজনীতি থেকে সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ, লুটপাট ও গণতন্ত্রহীনতা রুখে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছে।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে একাদশ কংগ্রেসের উদ্বোধনী সমাবেশে এ আহবান ও প্রত্যয়ের কথা জোর দিয়ে বলেন কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা।

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “দেশের মানুষের ভাগ্য বদলাতে কেবল গদি নয়, গণবিরোধী, জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী রাজনৈতিক নীতিও বদলাতে হবে। এ দেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজনীতির কোনো স্থন থাকতে পারে না। তরুণ প্রজন্ম বিপুল গণজাগরণ তৈরি করে তা বুঝিয়ে দিয়েছে। তাই এমন রাজনৈতিক পরিমণ্ডল নির্মাণ করতে হবে যেখানে সরকারি দল ও বিরোধী দল উভয়ই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হবে।”

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দল দুটি একে অপরের গদির বিরোধিতা করলেও তাদের আর্থ-সামাজিক নীতি অভিন্ন।

তিনি বলেন, “গত ২৫ বছর ধরে এই দুই দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলেও সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে নতজানু হয়ে মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে লুটপাটের ব্যবস’া চালু রেখেছে।”

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)এর আগে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা মধ্যদিয়ে দুপুর ২টায় সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সিপিবির চার দিনব্যাপী একাদশ কংগ্রেসের উদ্বোধন হয়। জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে কংগ্রেসের উদ্বোধন করেন পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ। এসময় দলীয় প্রতীক কাস্তে-হাতুড়ি ও লাল ঝাণ্ডাবাহি হাজার হাজার নেতাকর্মী, সমর্থকদের উপসি’তিতে উদ্বোধনস’ল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে উঠে লাল সমুদ্র।

অনুষ্ঠানে কংগ্রেসে আসা ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল, ভিয়েতনাম, জার্মানি, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়াসহ ১২টি দেশের কমিউনিস্ট ও ওয়ার্কার্স পার্টির ২৬ জন প্রতিনিধিদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। পার্টির বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা ছাড়াও রাজনেতিক দলের নেতা, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, পেশাজীবীরা এসময় উপসি’ত ছিলেন।

উদ্বোধনী  সমাবেশের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান সিপিবি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হায়দার আকবর খান রনো। এরপর বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান, জসিমউদ্দিন মন্ডল, সহিদুল্লাহ চৌধুরী।

সমাবেশ শেষে বের হয় র‌্যালি। এসময় লাল পতাকার জেল্লা, বাদ্য-গানে, স্লোগানে মূখর হয়ে ওঠে রাজপথ। র‌্যালিটি শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব, নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত, টিএসসি চত্বর হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

শনিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের (২য় তলা) কনফারেন্স কক্ষে কংগ্রেসের আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ২৯ ও ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মহানগর নাট্যমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here