এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি:: বান্দরবান জেলায় আন্দোলনের অজুহাতে উন্নয়ন কাজ বন্ধের ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্যেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদাররা।
জানাগেছে, জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঠিকাদারকে মারধরসহ নানামুখি হয়রানীর অভিযোগ এনে উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় ঠিকাদাররা। কিন্তু দুর্গম এলাকাসমুহে উন্নয়ন কাজ দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সরকারি নীতিমালায় বাধ্যবাধকতা রয়েছে- কর্তৃপক্ষীয় নিয়োজিত কার্যসহকারী ও অকুস্থল প্রকৌশলীদের সরেজমিন তদারকির।
কিন্তু ঠিকাদাররা আকস্মিকভাবে উন্নয়ন কাজের গতিবৃদ্ধি করে নিম্মমানের সামগ্রী বিশেষ করে কমগ্রেডের রড ব্যবহার করছে নির্মাণ কাজে। স্থানীয় বোল্ডার পাথর ও পুরানো ইট-সুরকিও ব্যবহার করা হচ্ছে নানাস্থানে উন্নয়ন কাজে প্রকাশ্যেই।
সরেজমিন পরিদর্শকালে জানা যায়, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, তুমব্রু, দোছড়ি ও বাইশারী, লামা উপজেলার ফাইতং ও গজালিয়া, রুমা উপজেলার পলিকাপাড়ায় এলজিইডি’র অর্থায়নে প্রায় ২০০ কোটি টাকার সড়ক ও ব্রিজসহ কালভার্ট নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলনের কথা মুখে বলে জেলা ঠিকাদার সমিতির সভাপতি সাবিকুর রহমান জুয়েল,ঠিকাদার সমিতির নেতা কামাল হোসেন, নূরুল আবছারসহ ঠিকাদাররা উন্নয়ন কাজের প্রকল্পগুলোতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
আন্দোলনকারী ঠিকাদার সমিতির উপদেষ্টা মোজাম্মেল হক বাহাদুর জানান, ঠিকাদার কামাল হোসেন প্রকাশ লেস কামালের সঙ্গে আমার যৌথভাবে কিছু উন্নয়ন কাজ চলছে। সেগুলো চলমান আছে কিনা, আমার জানা নেই। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমার অপসারণ আন্দোলন অনেকটা ঝিমিয়ে গেছে বলেও তিনি বলেন।
অন্যদিকে ঠিকাদার নূরুল আবছার বলেন, রুমা উপজেলার পলিকাপাড়া-চামা খাল সড়কে আমার ২টি ব্রিজ নির্মাণ কাজ চলছে। কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও ঠিকাদার সমিতি থেকে সঠিক কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় উন্নয়ন কাজগুলো বন্ধ রাখা যায়নি।
এলজিইডি’র নাইক্ষ্যংছড়ি ও থানচি উপজেলার দায়িত্বরত প্রকৌশলী তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং থানচি উপজেলায় দুটি উপজেলায় এলজিইডি’র উন্নয়ন কাজগুলো চলমান রয়েছে। মুখে কাজ বন্ধ রাখার কথা বললেও উন্নয়ন কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময়সীমা রয়েছে। সময়মত কাজ শেষ করতে ঠিকাদাররা বিপুল শ্রমিক দিয়ে কাজের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে।
বান্দরবান জেলা এলজিইডি সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেন, উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখার কোনও সুযোগ নেই। ঠিকাদারেরা নিজের স্বার্থেই চলমান উন্নয়ন কাজগুলো শেষ করতে কাজের গতি বাড়িয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর মেসার্স আকতার ট্রেডাসের লাইসেন্সের বই সংগ্রহ করতে লামা উপজেলার ঠিকাদার রফিক আহমেদ এলজিইডি জেলা অফিসে গেলে নির্বাহী প্রকৌশলী অফিস সহকারীর কম্পিউটার রুমে ঢুকে কোন কারণ ছাড়াই ঠিকাদার রফিককে ঘুষি এবং চর-থাপ্পর মারেন।
এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় জেলা ঠিকাদার সমিতি। একই দাবিতে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী এবং পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে ঠিকাদার সমিতির পক্ষ থেকে নেতারা এক স্মারকলিপি প্রদান করেন।