নয়া দিল্লি: বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত পুনর্নির্ধারণ চুক্তির সম্ভাবনা যে প্রায় নেই বললেই চলে, তা প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ৷

বুধবার সংসদ ভবন চত্বরে সীমান্ত চুক্তির কথা তুলতেই সালমান  প্রথমে হালকা সুরে বলেন, সীমান্ত তো যে জায়গায় ছিল, সেখানেই আছে৷ তার পর তিনি যোগ করেন, ‘আমি কথা বলব, মমতাজির সঙ্গে নিশ্চয়ই কথা বলব৷’ কিন্ত্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো এখন দিল্লিতে, তা হলে আপনি কথা বলছেন না কেন? সালমানের জবাব, ‘অবশ্যই বলব৷ আমাকে এটা তো জানতে হবে, আমার ভুলটা কোথায় হয়েছে?’ অর্থাৎ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাবিত এই বিলে রাজি হবেন না বুঝতে পেরে হতাশ সালমান এখন বিরোধিতার কারণ খুঁজতে চাইছেন৷

এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান কী? এদিনই তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, তিনি আর এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহ বোধ করছেন না৷ এর কারণও আছে৷ সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হতে আর দিন কয়েক বাকি৷ বিরোধীদের হইহল্লায় এ পর্যন্ত সংসদে একদিনও কাজ হয়নি৷ আগামী দিনগুলিতে হবে, এমন কোনো ইঙ্গিতও নেই৷ আর হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত পুনর্নির্ধারণ বিল পাশ হবে না৷

কারণ, মমতা মঙ্গলবারই সেন্ট্রাল হলে বলেছেন, আমার সঙ্গে সালমান কথা বলেননি৷ বললেও কোনো লাভ হবে না৷ আমার মত পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনাই নেই৷ আর শুধু তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, বিজেপি ও অসম গণ পরিষদও এই বিল পাশ করাতে দেবে না৷ সংবিধান সংশোধন বিল বলে দুই-তৃতীয়াংশ সাংসদের সমর্থন দরকার৷ সেটা সরকারের সঙ্গে নেই৷ ফলে সালমানের হতাশ হওয়াটাই স্বাভাবিক৷

শুধু তাই নয়, বর্তমান লোকসভার মেয়াদও শেষ হয়ে এসেছে৷ শীতকালীন অধিবেশনের পরে আগামী বছর একটি সংক্ষিপ্ত অধিবেশন হবে, যেখানে সরকারি খরচ চালানোর জন্য ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করা হবে৷ ওই অধিবেশনে অন্য কোনো বিল পাশ হওয়ার সম্ভাবনা নেই৷ বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে, চুক্তি করেও তা রাখতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং৷ এর ফলে বাংলাদেশের ভোটে শেখ হাসিনা নিশ্চিত ভাবেই বিপাকে পড়বেন৷ সালমানরাও এখন বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পেরে প্রকাশ্যে তা স্বীকারও করে নিচ্ছেন৷  সূত্র: সংবাদ সংস্থা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here