‘বরিশাল বিভাগের বেসরকারী ক্লিনিকে ৯৫ শতাংশ প্রসব অস্ত্রোপচারে'বিশেষ প্রতিনিধি :: বরিশাল বিভাগের সরকারী স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে অন্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের হার শতকরা ৫২ শতাংশ হলেও বেসরকারী হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এই চিত্র খুবই ভয়াবহ। এসব বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৯৫ শতাংশ প্রসব অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হয়েছে বলে দাবি করেছে নারী অধিকার সংগঠন নারীপক্ষ।

বরিশাল বিভাগের ১টি বিভাগীয় হাসপাতাল, ৪টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র্র, ৪টি জেলা সদর হাসপাতাল, ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ১৪টি বেসরকারী হাসপাতাল বা ক্লিনিকের গতবছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর অবধি ১৫ হাজার ৬শ ৮৯টি নবজাতক প্রসবের তথ্য সংগ্রহ করে নারীপক্ষ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা।

বিশ্লেষিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, বিভাগের দুইটি বেসরকারী ক্লিনিকের ৭শ ২৬টি প্রসবের মধ্যে সবক’টি (শতভাগ) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হয়েছে।

আন্তর্জাতিক নারীস্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে রোববার (২৭ মে) বরিশালে অবস্থান কর্মসূচি এবং আলোচনা সভায় এ চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটিত হয়েছে।

বিএমকেএস’র আয়োজনে এবং নারীপক্ষ ও অধিকার এখানে, এখনই! প্রকল্পের সহযোগিতায় এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

‘আর নয় অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার, চাই স্বাভাবিক প্রসবের অধিকার’ এই স্লোাগানে বরিশাল নগরীর এ.করিম আইডিয়াল কলেজের সম্মুখে অবস্থান কর্মসূচি এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ. করিম আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল সদর উপজেলার মেডিকেল অফিসার (মা ও শিশুস্বাস্থ্য) ডা. মো. হারুন-অর-রশিদ। যুব সংগঠক সোহানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও দিবসটির উপর ধারনাপত্র পাঠ করেন বিএমকেএস’র পরিচালক কাওছার পারভীন।

আলোচনায় অংশ নেন এ.করিম আইডিয়াল কলেজের গর্ভনিং বডির সদস্য আলহাজ¦ আ: রাজ্জাক, সহকারী অধ্যাপক আবু মঞ্জুরুল হক, নাসরীন নাহার ও মু: শাহানুর রহমান এবং বাংলাদেশ মডেল ইয়ূথ পার্লামেন্টের চেয়ারপার্সন আমিনুল ইসলাম (ফিরোজ মোস্তফা) প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে যে রকম সিজারিয়ানের মাধ্যমে প্রসূতি মায়েদের অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে তাতে মৃত্যু ঝুঁকি খুব বেড়ে গেছে। পরিবারের চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীর অধিকার ও স্বাস্থ্য বিশেষত প্রসূতি মৃত্যু হ্রাস ও প্রসবজনিত রোগভোগ থেকে রক্ষা পেতে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি, অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব কমানোর জন্য এই সকল বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে পর্যবেক্ষণ করা, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করা, কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন ও পর্যবেক্ষন জোরদারকরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিশোর-কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা সচেতনতা বৃদ্ধি আবশ্যক বলে মত প্রকাশ করেন তারা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here