বগুড়া শেরপুর উপজেলার নিভৃত পল্লিতে বাউকুল আপেলকুল আর থাইকুল চাষকরে স্বাবলম্বী বিদেশ ফেরত দুই বন্ধু আরিফুর রহমান রঞ্জু ও শহিদুল ইসলাম। গত বছর থেকে ৮ বিঘা জমিতে বিভিন্‌ কুলের গাছ লাগিয়েছে তারা। একাজে তাদের ফল ধরানোর আগ পর্যন্ত মোট ৩ লক্ষ টাকা খরচা হয়েছে। এখন দুই বাগান থেকে প্রতিদিন ৪৫ মন করে কুল বাজার জাত করছে। এ যাবৎ প্রায় ৮ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছে। এবারই প্রথম গাছগুলোতে কুল ধরেছে। তবে ৩ বছর গাছগুলো রাখার ইচ্ছে আছে তাদের।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলা থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দুরত্বে খামারকান্দি ইউনিয়নে নিভৃত পল্লী মাগুড়াত্তাই সোনারপাড়া গ্রামে তারা গড়েছে ভাগ্য পরিবর্তনের হাতিয়ার। অত্র এলাকায় সৃষ্টি করেছে দৃষ্টান্ত।

বিদেশ ফেরৎ শহিদুল ইসলাম জানায়, তিনি ছিলেন মালয়েশিয়ায় সেখানে তিনি একটি লোহার দোকানে কাজ করতো। বিনিময়ে মাসে পেতো ২০ হাজার টাকা। মাস শেষে বাড়িতে পাঠাতো ১৪ হাজার টাকা। ২০০১ সালে দেশে এসে বিয়ে করি। পরে বিভিন্ন ব্যবসা করি কিন্তু সব টাকা লোকসানেই শেষ। পরে একজনের কথায় বাউকুলের চাষ করে এখন স্বচ্ছল। এখন ঘরে বসে মাসে আয় হয় ২৫ হাজার টাকা।

অপর বন্ধু আরিফুর রহমান রঞ্জু জানায়, তিনি ছিলেন সৌদিতে। সেখানে একটি কোম্পানীর ড্রাইভার ছিলেন। বিদেশের মাটিতেই শপথ নেই আর বিদেশে নয় দেশেই যাব। এই পরিকল্পনা করে দেশে ফিরে আসি। যে টাকা নিয়ে এসেছিলাম তাও বিভিন্ন ব্যবসা করে শেষ। চোখে অন্ধকার দেখতে থাকি। কেউ সহযোগীতার হাত বাড়ায়নি। শুধু সম্বল হিসেবে ছিল মাত্র ১ লক্ষ টাকা। বন্ধু শহীদুলের কথায় কুল চাষে আসি। দুই বন্ধু মিলে এখন এই চাষে রয়েছি। বেশ কিছুদিন পরিচর্যা করার পর সুফল পাই। এখন বিদেশের মাটিতে টাকার জন্য দিনরাত যে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেছিলাম তার চেয়ে দ্বিগুন অর্থ উপার্জন করছি দেশের মাটিতে।

মহাস্থান থেকে বাউকুল, আপেলকুল, থাইকুলের ২২ হাজার চারা নিয়ে আসি। গত বছর থেকে ৮ বিঘা জমিতে পুরো গাছ তৈরী করে ফল ধরানোর আগ পর্যন্ত মোট ৩ লক্ষ টাকা খরচা হয়। এখন দুই বাগান থেকে প্রতিদিন ৪৫ মন করে কুল বাজার জাত করি। এ যাবৎ প্রায় ৮ লক্ষ টাকার কুল বিক্রি করেছি। এবারই প্রথম ধরেছে। তবে ৩ বছর গাছগুলো রাখার ইচ্ছে আছে।

তারা আরো জানায়, বিদেশের মাটিতে বসে ধুকে ধুকে মরার চেয়ে দেশের সোনার মাটিতে বাস করে পরিশ্রম করা অনেক ভাল। এ দেশেই পরিশ্রম করলে নিজেকে স্বাবলম্বী করে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানো যায়। বিদেশে গিয়ে অন্যের হয়ে কাজ করেছি। কিন্তু এখানে এসে নিজেই অন্যকে দিয়ে কাজ করে নিচ্ছি। সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/তানসেন আলম/বগুড়া

২৬-০২-১২

০১৯১৩-৩৫৪৩৭৩

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here