budegt-1_15376প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের সকল স্তরের মানুষের স্বার্থের প্রতি খেয়াল রেখে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তারা বলেন, এর ফলে গণমানুষের জীবনমানের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশে দারিদ্রের হার আরো হ্রাস পাবে। আর কাঙ্খিত সময়ে দেশ মধ্য আয় ও সমৃদ্ধ দেশে পরিনত হওয়ার দিকে আরো এগিয়ে যাবে। আজ সোসবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে মন্ত্রীদের জন্য প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা-উত্তর টেবিলে উপস্থাপন শেষে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। গত ২ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেট আলোচনার ৪র্থ দিনে আজ মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ, পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সরকারী দলের সুবিদ আলী ভুঁইয়া, গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন, আনোয়ারুল আজিম আনার, আমিনা আহমেদ, বেগম সাবিহা নাহার, জাতীয় পার্টির মো. সেলিম উদ্দীন, খোরশেদ আরা হক, জাতীয় পার্টি জেপির মো. রুহুল আমিন, ওয়ার্কার্স পার্টির মোস্তফা লুৎফুল্লাহ অংশ নেন। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। দারিদ্রসীমা ২০ শতাংশের নীচে চলে এসেছে।
তিনি বলেন, সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও গতিশীল নেতৃত্বে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদে বাংলাদেশ সমৃদ্ধশালী হচ্ছে। দেশে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ রক্ষার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যে সমুদ্রসীমা বাংলাদেশ অর্জন করেছে, সেখানে কি পরিমান মৎস্য সম্পদ রয়েছে তা চিহ্নিত করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে টেকসই মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন সম্ভব হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে হলে প্রাণী সম্পদ উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। এজন্য গরু ও মহিষের জাত উন্নয়নের উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি হাঁস, মুরগী ও ডিমের চাহিদা পূরণে উন্নতজাতের টিকার ব্যবস্থা করতে হবে। পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট দেশের সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্খা পূরণের উচ্চাভিলাষী বাজেট। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি মজবুত ও গতিশীল হচ্ছে।
উপমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট দেশের পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য রক্ষার মাধ্যমে টেকসই সবুজায়ন রক্ষায় সহায়ক হবে। তিনি বলেন, সরকার পরিবেশ ও বন রক্ষায় ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। দেশের বনভূমির পরিমাণ ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে বর্তমান সরকারের সময়ে ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের অন্য সদস্যরা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট গণমানুষের বাজেট।
তারা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে রপ্তানী খাত অনুযায়ী কর নির্ধারণ করায় তা ব্যবসায় কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। শিক্ষা খাতে যে বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, এতে শিক্ষিত জাতি গঠনে সহায়ক হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায় আরোপিত করের বিষয়ে পুনরায় সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তারা আহবান জানান। তারা বলেন, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি রোধ ও শেখ হাসিনা সরকারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মজবুত অবস্থানে রয়েছে।
সরকারি দলের সদস্যরা কৃষি খাতে ভর্তুকি বহাল রাখা ও মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর আরোপিত অতিরিক্ত ২ শতাংশ কর প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন। জাতীয় পার্টির সদস্যরা ব্যাংক ও আর্থিক সেক্টরে লুটপাট ও দুর্নীতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তারা দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরো স্বচ্ছতার সাথে দুর্নীতি দমনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। নারী ও শিশুর উন্নয়নে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। তারা রাজস্ব আদায়ের পরিধি বাড়িয়ে কর আদায় পদ্ধতি গণমুখী ও হয়রানিমুক্ত করে দেশের সকল নাগরিককে করের আওতায় আনার সুপারিশ করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here