ষ্টাফ রিপোর্টার :: স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে বাংলাদেশি পরিচয়ে প্রথম জাতীয় সংগীত গাইলেন বিলুপ্ত ছিটমহলের নতুন নাগরিকরা। বুধবার পঞ্চগড় জেলা সদরের বিলুপ্ত গারাতি ছিটমহলের মফিজার রহমান কলেজ মাঠের বিজয় দিবসের এই অনুষ্ঠান টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সরাসরি দেখল বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।
আকাশে বেলুন উড়িয়ে বিলুপ্ত ছিটমহলে প্রথমবারের মতো বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, গ্রামীণফোনের সিইও রাজীব শেঠী, প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইয়াসির রহমানসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা।
এ সময় পঞ্চগড়-১ ও ২ আসনের সাংসদ যথাক্রমে অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন ও নাজমুল হক প্রধান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, পুলিশ সুপার গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, নাগরিক অধিকার সমন্বয় কমিটি পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার সভাপতি মফিজার রহমানসহ জেলা পর্যায়ের পদস্থ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা উপস্থিত ছিলেন।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে দেশের বরেণ্য রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠে ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা- আমাদেরই বসুন্ধরা’ দেশের গান দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এর পরই বিলুপ্ত ছিটমহলের নতুন বাংলাদেশি নাগরিকরা আমন্ত্রিত অতিথিসহ উপস্থিত হাজারো মানুষের সঙ্গে একযোগে জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গাইতে গাইতে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
সমন্বরে মুখর করা এই কণ্ঠ উপস্থিত দর্শকসহ বাড়িতে বসে উপভোগ করে কোটি বাঙালি। এর পরই শুরু হয় রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও সুরের ধারার শিল্পীদের নিয়ে সমবেত গণসংগীত ও দেশের গান। তাদের গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচে অংশ নেন চ্যানেল আই নৃত্য শিল্পীরা। বিকাল ৪টার পর পর্যন্ত চলে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে বিলুপ্ত ছিটমহলের প্রথম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুপুর থেকেই বিভিন্ন ছিটমহলের নাগরিকসহ আশপাশ এলাকার হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে থাকে বিলুপ্ত গারাতি ছিটমহলের কলেজ মাঠে। দুপুর আড়াইটায় অনুষ্ঠান শুরুর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় কলেজ মাঠ।
আড়াইটার কিছুক্ষণ পর দুটি হেলিকপ্টারে কলেজ মাঠের পাশে নির্মিত অস্থায়ী হ্যালি প্যাডে নামেন সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, গ্রামীণফোনের সিইও রাজীব শেঠী।
হেলিকপ্টার থেকে নেমে আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা চলে আসেন মূল মঞ্চে। মূল অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে চ্যানেল আই। তাদের সৌজন্যে দেশের অন্যান্য টিভি চ্যানেলও আধাঘণ্টার জন্য অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে।