ঢাকা: কখনো জাল ডলার, কখনো হেরোইন, আবার কখনো অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগে বিদেশি নাগরিকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। অবৈধভাবে বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের এসব প্রতারণায় হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত তিন বছরে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪৪ জন আফ্রিকান নাগরিককে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া গত ৫ বছরে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অভিযোগে ৯১ আফ্রিকান নাগরিককে গ্রেফতার করে র্যাব। সবমিলিয়ে এই ৫ বছরে গ্রেফতার হওয়া বিদেশি নাগরিকের সংখ্যা দেড় শতাধিকের মতো। এদের অধিকাংশই খেলোয়াড় ও স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসেছিলেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও তারা দেশে ফিরে যাননি।
সোমবারও রাজধানীতে ৯ বিদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এরা জাল ডলারের ব্যবসায়ী। নানা কৌশলে মানুষকে ফুসলিয়ে জাল ডলার গুজে দিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিত। এর আগেও এ ধরনের অপরাধে একাধিক বিদেশি ধরা পড়েছে পুলিশ-র্যাবের হাতে। এছাড়াও সম্প্রতি ৪৪ নেপালি নাগরিককে আটক করার পর তাদের পুশব্যাক করা হয়েছে। এদেরও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
গোয়েন্দা সূত্র মতে, ১০ থেকে ১২ হাজার অবৈধ বিদেশি বাংলাদেশে অবস্থান করেছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে তাদের অনেকেই জড়িয়ে পড়েছে। কখনো ট্যুরিস্ট ভিসা আবার কখনো খোলোয়াড় ভিসায় এসে ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও তারা দেশেই অবস্থান করে থাকে।
সম্প্রতি ব্যাংকের এটিএম বুথে কার্ড জালিয়াতির সঙ্গেও বিদেশিদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। নাজরদারির পর এদের বেশ কয়েকজন ধরাও পড়ে।
এদিকে ঢাকা ও রংপুরে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকান্ডের পর বিদেশিদের নিরাপত্তায় বিশেষ উদ্যোগ নেয় সরকার। বিদেশিদের নিরাপত্তা দিতে গিয়েই বাঁধে বিপত্তি। বৈধভাবে অবস্থানকারীদের নাম, পরিচয়, ঠিকানা ও কর্মস্থল সরকারের কাছে থাকলেও অবৈধভাবে যারা আছেন তাদের কোনো তথ্যই নেই। ফলে তাদের যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
গোয়েন্দা সংস্থার হিসাবে দেখা গেছে, বর্তমানে দেশে বৈধভাবে বসবাসকারীর সংখ্যা ২ লাখ ২১ হাজার ৫৫৯ জন। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ যেমন- নাইজেরিয়া, উগান্ডা, ঘানা, আলজেরিয়া, আইভরি কোস্ট, সেনেগাল, ক্যামেরুন ও লাইবেরিয়া থেকে আসা অবৈধ নাগরিকদের অনেকে প্রায়ই বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছেন।