এক. আজ ৯ জানুয়ারি সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাসার মানুষজনকে বলেছি যে প্যারিস হত্যাকান্ডের খুনীরা জ্যান্ত ধরা পড়বে না।
দুই. জ্যান্ত ধরা পড়ার কোন কারণ নাই। কারণ হচ্ছে আমার ধারণা এই পুরো হত্যাকান্ড ইজরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ এর পরিকল্পনা।
মনে আছে তো যে তালেবানদের সৃষ্টি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রন? এখন সেই তালেবানদের হত্যা করতে তারা জীবন দিয়ে দিচ্ছে? অনেকটা তেমনই। ইউরোপে ইসলামের আধিপত্যে আতঙ্কিত হয়ে আমেরিকা আর ইজরায়েল যৌথভাবে এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। ইউরোপের অনেক দেশ প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিতে তৈরি, এতেও অনেকটা আতঙ্কিত ইজরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
তারা এখন চেষ্টা করছে পুরো ইউরোপে যাতে মুসলমান বিরোধী একটা আবেগ তৈরি হয়। তারা অনেকটাই সফল। কারণ ইতিমধ্যে জার্মানীর নব্য নাৎসিরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। মোসাদ এবং সি আই। এ সফল বৈকি।
তিন. আমি দুইবার মার্কিন সরকারের ফুল ব্রাইট স্কলারশীপে টপ পজিসন পেয়েছি বাংলাদেশে থেকে। কিন্তু দু’বারই ওয়াশংটন থেকে আমার সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়নি। আমাকে এমবেসি থেকে বলা হয়েছে আমার সোশাল এক্টিভিটি’তে আপোষ করতে। আমি করিনি। গেলাম না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
চার. আমি খুব বড় মুসলমান না। তবে আমি অস্ট্রেলিয়া, জার্মানী, ফ্রান্স, আমেরিকায় ঘটা এইসব ঘটনা ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখি না। দেখি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।
পাঁচ. বাংলাদেশে নাকি বাকস্বাধীনতা নাই। আমি খুব উদ্বেগের সাথে দেখছি যে বাংলাদেশের অমুসলিম বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের ফেইসবুকের স্ট্যাটাসের ৭০ শতাংশ মুসলমান এবং ইসলামের বিরুদ্ধে। আমি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই এদের মতো বর্নবাদী, ধর্মব্যবসায়ী, সুবিধাবাদী বুদ্ধিজীবী ইউরোপ, আমেরিকায় নাই, থাকলে সকল মুসলমানদের খুন করে ফেলতো।
ছয়. আমি বিশ্বাস করি ৯/১১ এর টুইন টাওয়ার ধবংসের ঘটনাও আমেরিকা-ইজরায়েলের করা। তারা বিশ্ব মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের বোকা বাক্সে যা দেখানো হয়, বোকা বিশ্ব তাই বিশ্বাস করে। দুঃখজনক হলেও সত্য কিছু বাঙালি মুসলমান যাদের অন্য দেশের নাগরিকত্ব দরকার, যারা অন্য দেশে পড়ে কিংবা পড়ায়, স্কলারশিপ চায়- তারা নির্দ্বিধায় চোখ বন্ধ করে এইসব আমেরিকা-ইজরায়েলের ষড়যন্ত্র মেনে নিয়ে নিজেদের বিরুদ্ধে কথা বলছে।
সাত. ঠিক এই কারণেই শাহরুখ খানের সেরা মুভি ‘স্বদেশ’ হিট হয় নাই। কারণ প্রবাসি ভারতীয়দের অপরাধবোধ।
আট. প্যারিসে যে ঘটনা ঘটেছে তার সমর্থন করি না। আশা করবো আমেরিকা-ইজরায়েল তাদের এইসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসবে। মুসলমান কিছু বোকা কালো মানুষ মোসাদের টাকায় খুনে জড়িত হলেও দায়ী হবে সারা বিশ্বের সকল মুসলমান।
কোন কালো মানুষ খুন করলে দায়ী হবে পৃথিবীর সকল কালো মানুষ। অথচ প্রতিদিন স্কুলছাত্র-ছাত্রী খুন করা সাদা চামড়াদের বলা হবে মানসিক ভারসাম্যহীন- এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়া দরকার।
নয়. জানি মুসলমান এবং ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধের কথা না বললে বুদ্ধিজীবী হওয়া যায় না, না হওয়া যাক, আমি যা বিশ্বাস করি তাই বলি, বলব।
লেখক: shamimahmedjitu@gmail.com