মিলন কর্মকার রাজু।

কলাপাড়া: পটুয়াখালীর কলাপাড়ার পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে আনুষ্ঠানিক পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পায়রা বন্দর থেকে তিন দশমিক ৮০ নটিক্যাল দূরে রাবনাবাদ নদ’র মোহনায় নোঙর করে রাখা ওই জাহাজ থেকে শনিবার বিকাল ৩টায় লাইটার জাহাজ এম ভি চান সরদার এ পণ্য খালাসের কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন সাইদুর রহমান। এ সময় মদিনা গ্রুপের উপদেষ্টা গোলাম হোসেন, ডিজিএম মাহবুবু আলম উপস্থিত ছিলেন।

KALAPARA PIC-1( 3-9-16)পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, মদিনা গ্রুপ মালয়েশিয়া থেকে ওই জাহাজে করে ১২ হাজার ৮’শ মেট্রিকটন ক্লিংকার নিয়ে আসেন। কিন্তু দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে পায়রা বন্দরে কয়েক দফা চেষ্টার পরও পণ্য খালাস করতে পারেনি। ফলে ২২ আগষ্ট চট্রগ্রাম বন্দরে গিয়ে চার হাজার মেট্রিকটন পণ্য খালাস করেন।

আবহাওয়া ভালো হওয়ায় ৩ সেপ্টেম্বর পুনঃরায় জাহাজটি পায়রা বন্দরের অভ্যন্তরীন নোঙরে পণ্য নিয়ে আসে এবং দুপুরে পণ্য খালাস শুরু করে। এর ফলে প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধোধনের ২০ দিন পর পায়রা বন্দরে আনুষ্ঠানিক পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

জানাযায়, মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য নামিয়ে এম ভি চান সরদার জাহাজে করে ১১’শ মেট্রিকটন পণ্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ো হবে। এছাড়া লাইটার জাহাজ হাজী সেলিম-১ এর মাধ্যমে ২৫’শ মেট্রিকটন, হাজী সেলিম-২ এর মাধ্যমে ২৫’শ মেট্রিকটন এবং ২৪০২ মেট্রিকটন পণ্য ঢাকায় নেয়া হবে।

এম ভি এফ এস বীচ জাহাজের ক্যাাপ্টেন ভিয়েতনামের দেয়ান মা ফু বলেন, বাংলাদেশের নতুন সমুদ্র বন্দরে এসে আমার খুব ভালো লেগেছে। রাবনাবাদ চ্যানেলের পায়রা বন্দরে জাহাজ নিয়ে প্রবেশ করতে আমার কোন সমস্যা হয়নি।

মদিনা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম সাংবাদিকদের জানান, এম ভি ফরচুন বার্ড প্রথম পায়রা বন্দরে আসা প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ। কিন্তু ওই জাহাজ এখানে পণ্য খালাস করতে পারেনি। এফএস বীচ পায়রা বন্দরে আসা দ্বিতীয় জাহাজ। শনিবার এই জাহাজ পায়রা বন্দরে প্রথম জাহাজ হিসেবে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করেছে। আজ থেকে এই বন্দরে আনুষ্ঠানিক পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হলো।

উল্লেখ্য, গত ১ আগষ্ট থেকে রাবনাবাদ চ্যানেলের পায়রা সমুদ্র থেকে প্রায় ৩০ নটিক্যাল মাইল দূরে সাগরের হিরন পয়েন্টে ৫২ হাজার তিনশ ৭৯ মেট্রিকটন পাথর নিয়ে এমভি ফরচুৃন বার্ড ২২ দিন অপেক্ষা করার পর দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে পণ্য খালাস করতে না পেওে ২২ আগষ্ট কুতুবদিয়া চলে যায়।

লাইটার জাহাজ এম ভি চান সরদার এর মাষ্টার নিজাম উদ্দিন বলেন, পায়রা বন্দরে প্রথম জাহাজের মাষ্টার হিসেবে পণ্য খালাস কার্যক্রমে থাকতে পেরে আমি খুশি।
পায়রা বন্দরের চীফ হাইড্রোগ্রাফার এম হাবিব উল আলম বলেন, আমি চট্রগ্রাম বন্দর থেকে এফএস বীচ জাহাজটিকে পথ দেখিয়ে পায়রা বন্দরে নিয়ে এসেছি। পায়রা বন্দরে পণ্য নিয়ে আসা জাহাজের জন্য নৌ-বাহিনী এবং কোষ্টগার্ড সার্বক্ষনিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন সাইদুর রহমান বলেন, দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে এতোদিন পায়রা বন্দরে পণ্য খালাস করা যায়নি। আগামী দুই বছরের মধ্যে রাবনাবাদ চ্যানেলের খনন কাজ শেষ হলে ১২-১৪ মিটার গভীর জাহাজও এই বন্দরে ঢুকতে কোন অসুবিধা হবে না।

তিনি বলেন, আগামী ৬ সেপ্টম্বও চায়রা হারবার কোম্পানী কে কে বাতাং হারি জাহাজে করে ড্রেজার এবং ম্যাকশ গ্রুপ এমভি ষ্টার-১ জাহাজ ৭ হাজার মেট্রিকটন পাথর নিয়ে পায়রা বন্দরের বর্হিনোয়ওে ভিড়বে। এভাবেই পায়রা বন্দও থেকে প্রতিদিন পণ্য খালাস কার্যক্রম চলতে থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here