পাবনায় পৃথক দুইটি ঘটনায় গৃহবধূসহ দুই জন খুন হয়েছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে পাবনায় পাঁচটি খুনের ঘটনায় সাধারন মানুষের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নিজ জেলা পাবনায় আইন শৃংখলার চরম অবনতিতে সাধারন মানুষ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ক্ষমতাশীন দলের দাপটের কাছে পুলিশ অসহায় হয়ে পড়েছে । ফলে আইন শৃংখলার উন্নয়নে পুলিশ কোন ভুমিকা রাখতে পারছেনা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পাবনার শহরতলীর রামচন্দ্রপুর গ্রামের অনন্তবাজার মোড়ে যৌতুকের দাবী মেটাতে না পারায় হাফিজা খাতুন (১৯) নামের এক গৃহবধু স্বামীর হাতে খুন হয়েছে। নিহত গৃহবধুর শাশুড়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূ গয়েশপুর ইউনিয়নের হরিনারায়নপুর গ্রামের কৃষক নাজিমউদ্দিনের মেয়ে।

নিহতের পিতা জানান, গত প্রায় ৮ মাস আগে হাফিজা খাতুন রামচন্দ্রপুর গ্রামের স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মুজাম্মেল হক ওরফে মেলুর ছেলে শিমুলের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। এরপর আরো যৗতুকের দাবীতে বিভিন্ন সময়ে স্বামী শিমুলসহ তার বাড়ীর লোকজন হাফিজা খাতুনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেতে থাকে। গত মঙ্গবার দিনগত গভীর রাতে মারপিটের এক পর্যায় হাফিজা মারা যায়।

এ ব্যাপারে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এইচ এনায়েত উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হাফিজার চাচা আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ৩ জনের বিরুদ্ধে (স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ী) মামলা করেন। ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত শাশুড়ী শিউলী খাতুনকে গ্রেফতার করেছে।

এদিকে ফরিদপুর থানা পুলিশ জানায়, চরমপন্থী সংগঠন জনযুদ্ধের অভ্যান্তরীন কন্দলের কোন্দলের জেরধরে সন্ত্রাসীদের হাতে এক চরমপন্থী ক্যাডার নিহত হয়েছে। নিহত জানু মোল্লা (২৮) সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমরা গ্রামের মোজাই মোল্লার ছেলে।

পুলিশ জানায় নিহত জানু মোল্লা পূর্ববাংলা কমিউনিষ্ট পার্টি (এমএল জনযুদ্ধ)’র ক্যাডার ছিল।  বুধবার সকালে উপজেলার মঙ্গলগ্রাম বাজার থেকে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহত জানুর ভাই ফারুক মোল্লা বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৩/৪শ’ জনকে আসামী করে ফরিদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

এর আগে গত সোমবার রাতে জেলার আতাইকুলায় একজন এবং মঙ্গলবার দুপুর ও সন্ধায় জেলার ঈশ্বরদীতে দুই জন খুন হয়েছে। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন স্থানে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক ঘটনা ঘটছে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ক্ষমতাশীন দলের ছত্রছায়ায় অধিকাংশ ঘটনা ঘটায় পুলিশ প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। ক্ষমতাশীন দলের দাপটের কাছে বর্তমানে পুলিশ অসহায় হয়ে পড়েছে।

ইউনাইটেড নু্জি ২৪ ডট কম/কলিট তালুকদার/পাবনা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here