পাঁচ ঘণ্টা পর শিশু নীরবের নিথর দেহ উদ্ধারষ্টাফ রিপোর্টার :: এবার ঢাকনাবিহীন ম্যানহোলে পড়ে রাজধানীর শ্যামপুর বাজার সংলগ্ন পালপাড়া এলাকার ৫ বছর বয়সী শিশু ইসমাইল হোসেন নীরবের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এই দুর্ঘটনার ৫ ঘণ্টা পর রাত সোয়া ৮টার দিকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
কদমতলী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় জানান, পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা রেজাউল ইসলামের

একমাত্র সন্তান নীরব বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় খোলা ম্যানহোলে পড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ডুবুরি ম্যানহোলে নেমে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে রাত সোয়া ৮টার দিকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করেন।

নীরবের এক খেলার সাথীর বরাত দিয়ে তার চাচা জানান, দুই বন্ধুকে নিয়ে নীরব বাড়ির নিকটবর্তী পালপাড়ার একটি রাস্তায় খেলাধুলা করছিল। এর কিছুক্ষণ পর তাদের আরো এক বন্ধু এসে যোগ দেয়। এক পর্যায়ে এক খেলার সাথীর ধাক্কায় নীরব ম্যানহোলে পড়ে যায়। এ সময় অন্যরা তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে তারা দৌড়ে বাসায় গিয়ে বিষয়টি নীরবের মাকে জানায়।
খবর পেয়ে মাসহ অন্যরা ম্যানহোলে নেমে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশে খবর দেন।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মুহাসীন রেজা জানান, ওই ম্যানহোলের ড্রেন বুড়িগঙ্গায় গিয়ে মিশেছে। ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা একাধিকবার ম্যানহোলের ভেতরে নামেন। কিন্তু নিচে পানির তীব্র স্রোত থাকায় শিশুটির অবস্থান সহজে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ভেতরে অন্ধকারাচ্ছন্ন হওয়ায় উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হয়। তবে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে রাত সোয়া ৮টার দিকে বুড়িগঙ্গার সস্নুইস গেট এলাকা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
নীরবের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, স্থানীয় একটি কারখানার বর্জ্য ওই খোলা ম্যানহোলের ভেতরে পড়ত। এজন্য এটি ঢাকনা লাগানো হয়নি। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা কারখানার মালিককে একাধিকবার অনুরোধ করলেও তিনি বিষয়টি আমলে নেননি।
স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি জানান, ওই ড্রেনটি ঢাকা ওয়াসার। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কখনো এর দেখভাল করেনি। এমনকি তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও এর প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
তবে এ ব্যাপারে ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী কিছু বলতে চাননি। ঘটনার পর তাকে টেলিফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এক্ষুনি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাজধানীর শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পানির পাম্পের ৩০০ ফুট গভীর একটি পাইপের ভেতরে জিহাদ নামে চার বছরের একটি শিশু পড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের দীর্ঘ ২৩ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে জিহাদকে উদ্ধার করতে না পারলেও পরে একদল স্বেচ্ছাসেবী তার নিথর দেহ গভীর নলকূপের ভেতর থেকে তুলে আনে।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here