ষ্টাফ রিপোর্টার ::  ঢাকার বাইরে খোলামেলা পরিবেশে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে রাজধানী মিরপুরের বেনারসি পল্লি। মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার শিবচর ও জাজিরা উপজেলায় নতুন করে এই পল্লি গড়ে তোলা হবে।

ওই দুই জেলায় নতুন তাঁতপল্লির নামকরণ করা হয়েছে ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লি’। পল্লিটি গড়ে তুলতে ১২০ একর জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলছে।

জানা গেছে, নতুন ওই পল্লিতে বেনারসি ও সাধারণ তাঁতিদের জন্য ঘরবাড়ি ও শিশুদের স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন নাগরিক সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করা হবে। শিল্পের বিকাশে উন্নত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেনারসি তাঁতপল্লি ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লি স্থাপন (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন পেয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। প্রকল্পটি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এই বছরের জুলাই মাসে শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা সম্পন্ন হওয়ায় কথা রয়েছে।

জানা যায়, রাজধানীর মিরপুর এলাকায় প্রায় শত বছরেরও বেশি সময় ধরে বেনারসি পল্লিটি গড়ে উঠেছে। কাতান শাড়ির জন্য বিখ্যাত দেশের একমাত্র বড় বাজার এটি।

মিরপুর বেনারসি পল্লির আশপাশের এলাকায় যেসব তাঁতঘর ছিল, তা দিনে দিনে উঠে যাচ্ছে। বর্তমানে তাঁতিরা চড়া দামে বাসা ভাড়া নিয়ে ওই এলাকায় বসবাস করলেও তাঁত বুনে তারা খরচ তুলতে পারছেন না।

এছাড়া মিরপুরে তাঁতের সংখ্যা কমে যাওয়ার বড় কারণ হচ্ছে এখানকার তাঁত ঘরগুলো ভেঙে বড় বড় আবাসিক ভবন করা হচ্ছে। ফলে অনেকটাই আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন তাঁতিরা।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উন্মুক্ত ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাঁত বস্ত্র উৎপাদনের কথা বিবেচনায় রেখে বেনারসি এবং অন্যান্য তাঁতিদেরকে ঢাকার বাইরে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তাঁত শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, অধিক পরিমাণে তাঁত বস্ত্র উৎপাদন, দেশের তাঁতিদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।

এই বছরের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটির ওপর পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রকল্পটি দুটি পর্যায়ে বাস্তবায়নের প্রস্তাব ওঠে।

প্রথম পর্যায়ে ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ডিজাইন বা লে-আউট প্ল্যান তৈরিসহ অন্যান্য কাজের জন্য ডিপিপি প্রস্তুত করে অনুমোদনের জন্য পেশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উন্নত পরিবেশে তাঁতি ও তাদের পরিবারের জন্য বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা সৃষ্টি হবে।

তাঁতিদের জীবনযাত্রার মান ও আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে এবং তাঁত শিল্পের টেকসই উন্নয়ন হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here