ডেস্ক নিউজ :: ভারতে ৭০০ বছর আগেকার চিতোরের রানি পদ্মিনীকে নিয়ে তৈরি বলিউড ছায়াছবি ‘পদ্মাবত’ সারা দেশেই একসঙ্গে মুক্তি পাবে বলে সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে।
দেশের চারটি বিজেপি-শাসিত রাজ্য এর আগে এই বিতর্কিত সিনেমাটি নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্তু তা খারিজ করে শীর্ষ আদালত বলেছে, রাজ্যগুলো আলাদা করে কোনও সিনেমা নিষিদ্ধ করতে চাইলে তা হবে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।
যে রাজপুত সংগঠনটি গত কয়েক মাস ধরে এই ছবিটির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে সেই কার্নি সেনা অবশ্য এখনও ‘পদ্মাবত’ বর্জনের ডাক দিচ্ছে।
আর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা ভাবছে হরিয়ানা, রাজস্থানের মতো অনেক রাজ্যই।
বলিউডের নামজাদা পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভানশালির ছবি পদ্মাবতী রাজপুতদের ভাবাবেগকে আহত করবে, এই যুক্তিতে গত ক’মাস ধরে ভারতের নানা প্রান্তে যে পরিমাণ বিক্ষোভ-প্রতিবাদ ও ভাঙচুর হয়েছে তা প্রায় নজিরবিহীন।
শেষ পর্যন্ত ছবির নাম পাল্টে ও কিছু পরিমার্জন করে ছবির নির্মাতারা সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছেন, আর আগামী ২৫শে জানুয়ারি তা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ারও কথা।
কিন্তু এর মধ্যে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও হরিয়ানা ছবিটি নিষিদ্ধ করলে নির্মাতারা আদালতের শরণাপন্ন হন।
আর সেই আবেদনেই প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর রায় বৃহস্পতিবার রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে গেছে।
চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বিবিসিকে বলেন, ছবিটি না-দেখেই যারা এর সমালোচনা করেছেন, তাদের তীব্র কটাক্ষ করে গৌতম ঘোষ আরও বলেন, “আগে ছবিটা দেখা হোক। তারপর আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে তা সামলাতে হবে – এই তো মোদ্দা কথা!”
বস্তুত সুপ্রিম কোর্ট এ কথাও বলেছে, চম্বলের দস্যুরানি ফুলন দেবীকে নিয়ে তৈরি ছবি ‘ব্যান্ডিট কুইন’ও অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে তৈরি হয়েছিল, কিন্তু সে ছবি মুক্তি পেতে পারলে পদ্মাবত কী দোষ করল?
কিন্তু যে রাজ্যগুলি পদ্মাবতকে নিষিদ্ধ করেছে তারা অত সহজে এই যুক্তি মানতে প্রস্তুত নয়।
রাজস্থানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাবচাঁদ কাটারিয়া রায়ের পর বলেছেন, “আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্যের, আর সেই দায়িত্ব পালনের জন্য এই ধরনের আদেশ জারির অধিকারও রাজ্য সরকারের আছে। তারপরেও সুপ্রিম কোর্ট যখন এ কথা বলেছে আমরা সেই রায় খতিয়ে দেখে ও আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করব।”