‘নিরাপদ চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবী’

স্টাফ রিপোর্টার :: রাষ্ট্রের কাছ থেকে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে সে ব্যবস্থা অপ্রতুল, এই সুযোগে সারা দেশের আনাচে কানাচে গজিয়ে ওঠেছে অসংখ বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। সারাদেশের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর অনিয়ম চরমে উঠেছে। পুরো ব্যবস্থায় এখন চলছে মালিক, চিকিৎসকের স্বেচ্ছাচার ও চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা। স্বাস্থ্যসেবা এখন একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে দেশের স্বাস্থ্যসেবা।

এমতাবস্থায় শনিবার (২৪ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব এর সামনে নিরাপদ চিকিৎসা চাই (নিচিচা) এর উদ্যোগে “চিকিৎসা সেবার নামে বানিজ্য বন্ধ কর, নিরাপদ চিকিৎসা নিশ্চিত কর“ দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।

নিরাপদ চিকিৎসা চাই এর সহসভাপতি ডাক্তার নওরিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে উক্ত কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক উম্মে সালমা, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, নদী রক্ষা জোট এর আহবায়ক মিহির বিশ্বাস, উন্নয়ন ধারা ট্রাষ্টের নির্বাহী পরিচালক আমিনুল রসূল, পশ্চিম রসুলপুর ওয়েল ফেয়ার সোসাইটির সহ-সভাপতি তৌহিদূল ইসলাম মাতিন, স্বচেতন নগরবাসীর সভাপতি জি.এম রোস্তম খান, জাতীয় উন্নয়ন পার্টির চেয়ারম্যান মাহবুব খোকন, এল আর বি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শারমিন পারভীন লিজা, নিচিচার আইন বিষয়ক সম্পাদক রুনা পারভিন মিমি, নির্বাহী সদস্য শহিদুল ইসলাম বাবু, নিচিচার সিলেট জেলার সভাপতি মহিউদ্দিন মহি, জামালপুর জেলার সভাপতি মোজাম্মেল হক, ঢাকা জেলার যুগ্ন সম্পাদক মোঃ শাহেদ প্রমূখ, শরিয়তপুর প্রতিনীধি শারমিন পারভীন লিজা প্রমূখ।

বক্তার বলেন, একটি রাষ্ট্রের নাগরিকদের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে চিকিৎসা হলো অন্যতম। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যই মানুষের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্রের কাছ থেকে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার, আথচ স্বাস্থ্য সেবা নিতে গিয়ে রোগাক্রান্ত অসহায় মানুষ পদে পদে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বিশ ¦স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ব্যর্থতার কারণে দেশের শতকরা ৬৮ ভাগ লোক বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র চিকিৎসা নেন। এ সুযোগসহ সরকারের অদক্ষতা, অবহেলা, উদাসীনতার সুযোগে মালিকরা চালাচ্ছেন স্বেচ্ছাচারিতা।

সারাদেশে আনাচে-কানাচে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে হাসপাতাল,ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এদের অধিকাংশেরই নেই কোন সরকারি অনুমোদন। কেউ কেউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন নিয়ে সাজিয়ে বসেছেন হাসপাতালের ব্যবসা। ভর্তি করা হয় রোগী। ভাড়া করে আনা হয় চিকিৎসক। এসব ক্লিনিক ও হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা সেবার নামে চলছে বাণিজ্য। বর্তমানে আমাদের দেশের অধিকাংশ হাসপাতাল-ক্লিনিকের মালিক ও ডাক্তাররা সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার পরিবর্তে উপার্জনকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তাদের ব্যবসায়িক নির্মম মানসিকতার বলি হয়ে অনেকে নি:স্ব হচ্ছেন, অনেকে ভুল চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। এমতবস্থায় চিকিৎসা সেবার নামে সকল অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাষ্টের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন সহ রাজনৈতিক এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে বক্তার জানান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here