বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক থেকে: জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারন অধিবেশনে যোগদানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী আসছেন নিউ ইয়র্কে। এ সময় হাসিনা-মোদির বৈঠকের সম্ভাবনা থাকলেও তা এখন পর্যন্ত নিশিচত করা হয়নি। এ বৈঠকের ব্যাপারে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়।
জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারন অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর। শেখ হাসিনা ঐদিন সকালে নিউ ইয়র্কে আসছেন। প্রথমদিন ভাষণ দেবেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এর আগে ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ নিয়ে সম্মেলন হবে আগামী ২৩শে সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায়।
সেই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে ২২ সেপ্টম্বর দু’টো গুরুত্বপূর্ণ সামিট হবে। একটি সামিট হচ্ছে কায়রো সম্মেলনের ২০ বছর পূর্তি ও অন্যটি হচ্ছে আদিবাসীদের নিয়ে। আদিবাসীদের নিয়ে জাতিসংঘের এটি হচ্ছে প্রথম সামিট।
এদিকে এক সময়ে নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা নরেন্দ্র মোদি সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসছেন। ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
গত মে মাসে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর এটাই হবে বিজেপি নেতার প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই নেতা ভারত-মার্কিন সম্পর্কের কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করবেন। কীভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরো বাড়ানো যায়, কিভাবে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরো বিস্তৃত করা যায়, কীভাবে দুই দেশের জনগণের কল্যাণ সাধন করা যায় তার উপায় নিয়ে বিস্তর আলোচনা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র কেইটলিন হেইডেন জানান, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ককে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সেই গুরুত্ব বিবেচনায় মোদি দুই দিন প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে বৈঠক করবেন। ২০০৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ যুক্তরাষ্ট্র সফরে মোদির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। গত বছরও মার্কিন সিনেট তাকে ভিসা দেয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানায়।
মোদির বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেননি, বরং উসকানি দিয়েছেন। দাঙ্গায় ১ হাজারের বেশি মুসলমান নিহত হয়। অবশ্য নরেন্দ্র মোদি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গত নির্বাচনে ভারতে কংগ্রেসের ওপর থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় মোদির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পাল্টাতে থাকে। তাই ভারতে ক্ষমতার পট পরিবর্তনে ওয়াশিংটন যথেষ্ট সময় ব্যয় করতে চায়নি। নতুন সরকারের সঙ্গে দ্রুত সম্পর্কোন্ননের উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ওবামা পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চুক হেগেলকে নয়াদিল্লি পাঠান।
জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেন স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন আগামী ২৬ অথবা ২৭শে সেপ্টেম্বর। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই বৈঠক হতে পারে আগামী ২৭শে সেপ্টম্বর। এ ব্যাপারে দুই মিশন যৌথভাবে কাজ করছে বলে সূত্র জানায়।