কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় পুলিশ হেফাজতে জাকির সাদিক (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার রাত ১১টার দিকে দৌলতপুর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রের দাবী শনিবার ভোরে তেকালা থানার ইনচার্য এ এস আই মাসুদুর রহমান গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর গভীর রাতে দৌলতপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এক প্রতিবেশী মোবাইল করে জানান জাকির মারা গেছে। তাদের দাবী সুস্থ্য অবস্থায় চর প্রাগপুরস্থ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে পুলিশ।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সালেহ আহম্মেদ জানান, গতকাল রাত ১০.৩৫ টায় দৌলতপুর থানা পুলিশ জাকির সাদিক নামের ঐ যুবককে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসলে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাৎক্ষনিক কিছু কার্ডিয়াক থেরাপি দেয়ার এক পর্যায়ে রোগীটির মুত্যু হয়। এরপর রাতেই পুলিশ এখান থেকে নিহতের লাশ নিয়ে যায়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অরবিন্দু পাল জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় দৌলতপুর থানা থেকে প্রেরিত জাকির সাদিকের লাশ ময়না তদন্তের সময় নিহতের গলায় ও শরীরে বেশ কিছু জখম জনিত ক্ষত দেখা যায়। এছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
দৌলতপুর থানা পুলিশ জানায়, উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের চরপ্রাগপুর গ্রামের মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামী জাকির সাদিককে শনিবার রাতে মথুরাপুর ক্যাম্পের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে পুলিশ দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। একপর্যায়ে জাকির সাদিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
দৌলতপুর থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল আলম জানান, নিহত জাকিরের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা নং ১৫, তাং ১০/০৬/২০১৩ যার জি আর নং ১৭৫/২০১৩ বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৩’র ২৫-(বি) ধারার মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকায় তেকালা পুলিশ ক্যাম্পের আইসি এ এস আই মাসুদুর রহমান শনিবার ভোরে তাকে গ্রেফতার করে।
এরপর দুপুর ২:০৫ টায় দৌলতপুর থানায় সৌপর্দ করা হয়। এদিন রাত ১০টার দিকে থানা হাজতে থাকা জাকির অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সেখান থেকে নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য নিহত জাকির সাদিককে গ্রেফতারকারী দৌলতপুর থানার তেকালা পুলিশ ক্যাম্পের আইসি এএসআই মাসুদুর রহমান’র সাথে মুঠোফোনে অসংখ্যবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
কাঞ্চন কুমার/