ষ্টাফ রিপোর্টার :: রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুল এলাকায় দেবর-ভাবির পরকীয়ায় বলি হন মনিরুজ্জামান মনির ওরফে মনু। দেবর-ভাবির দীর্ঘ দিনের অবৈধ সম্পর্কের কাটা মনিরকে সরানোর জন্য হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন আপন ছোট ভাই আজমল হক মিন্টু ও স্ত্রী কাজল রেখা। হত্যার জন্য তাঁরা ভাড়া করেছিলেন ঢাকার তিনজন খুনিকে।

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান জোনের উপকমিশনারের কার্যালয়ে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এস এম মোস্তাক আহমেদ খান।

ডিসি গুলশান বলেন, মামলাটি তদন্তকালে প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাড্ডা থানা পুলিশ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে এবং এই হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী নিহত মনিরের স্ত্রী কাজল রেখাকে (৩০) গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পর কাজল রেখা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে রেখার দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলে হত্যার পরিকল্পনাকারী মিন্টু ও এই হত্যাকাণ্ডের ভাড়াটে তিনজন খুনিকে গ্রেপ্তার করে বাড্ডা থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজন হলেন আজমল হক মিন্টু, কাজল রেখা, আবদুল মান্নান, সোহাগ ওরফে শাওন ও ফাহিম। তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি চাকু (সুইচ গিয়ার) ও নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

তদন্তকালে হত্যার কারণ সম্পর্কে জানা যায়, নিহত মনিরের স্ত্রী কাজল রেখার সঙ্গে আপন ছোট ভাই আজমল হক মিন্টুর আট-নয় বছর ধরে পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল।

তাদের এই সম্পর্ক স্থায়ী করতে মনিরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্ত্রী কাজল ও ছোট ভাই মিন্টু।  পরিকল্পনা হিসেবে তাঁরা এক লাখ টাকার ‍চুক্তিতে ঢাকার তিনজন খুনিকে ভাড়া করেন।

অগ্রিম হিসেবে তাদের ৩০ হাজার টাকা দেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাড়াটে খুনিরা মনিরকে হত্যা করেন। খুনের দায় এড়াতে আজমল হক মিন্টু নিজে বাদী হয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর বাড্ডা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

পরে বাড্ডা থানার পুলিশ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে। মিন্টুর করা মামলা নিষ্পত্তি করে পুলিশ বাদী হয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা করে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর সকাল পৌনে ৮টায় বাড্ডা থানাধীন সাতারকুলের ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পশ্চিম দিকে হিন্দুপাড়ার খোলা মাঠে গলা ও পেটে ছুরিকাঘাত করা একটি অজ্ঞাতনামা মৃতদেহ উদ্ধার করে বাড্ডা থানা পুলিশ।

মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। পরে নিহতের আত্মীয়স্বজন ও ছোট ভাই আজমল হক মিন্টু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃতদেহটি শনাক্ত করে এবং বাড্ডা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here