images888মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল : এবার বরিশালে একটি দন্ত চিকৎসালয়ের বিরূদ্ধে পাওয়া গেছে লোম হর্ষক তথ্য। নগরীর রূপাতলী মোল্লা মার্কেটে অবস্থিত ‘চন্দ্রদ্বীপ ডেন্টাল কেয়ার’ এর ব্যবসার আড়ালে দেহ ব্যবসার অভযোগ উঠেছে। আর এই ব্যবসার সাথে প্রশাসন মিডিয়া সহ প্রভাবশালীদের হাত করে অপরাধীরা বরাবরই থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। জানাগেছে, প্রথমে অসহায় যুবতী মহিলা কিংবা মেয়েদের খোজখবর। সমাজ সেবক হিসেবে সখ্যতা। ছোট খাট কিছু লোক দেখানো ভালো কাজ। আর তার আড়ালে গোপন মিশন। এমন একটি বড় নারী পাচারকারী ও  প্রতারক চক্রের সন্ধান মিলেছে বরিশাল নগরীতে। আর এই চক্রের সাথে রয়েছে ডাক্তার, জনপ্রতিনিধি, বখাটে সন্ত্রাসী সহ রয়েছে কিছু ভদ্রবেশী ব্যবসায়ী। এসব করে একদিকে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা অপরদিকে কালো পথের দিকে ঠেলে দিয়ে নস্ট করছে অসংখ্য নাড়ীর জীবন। এসব মানুষেরা ভদ্রবেশী মুখোশধারী হওয়ায় বারবরই থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে।

সূত্র জানায়, রূপাতলী বাস স্ট্যান্ডের মোল্লা মার্কেটে থাকা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড টানিয়েছে ‘চন্দ্রদ্বীপ ডেন্টাল কেয়ার’। দাত ও মুখের আধুনিক চিকিৎসার কথা লেখা থাকলে এখানে ঘটছে অন্য কিছু। প্রতিদিন রোগীর পরিবর্তে নতুন নতুন যুবতী ও মহিলাদের নিয়ে আসছে একটি দালাল চক্র। আর এসব চক্রের সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছেন এখানের চিকিৎসক খ্যাত ডা. শহীদুল ইসলাম শহীদ। আর তাদের খপ্পরে পরা এসব মানুষেরা অন্যায় করতে অস্বীকৃতি জানালে হামলা মামলা সহ গুম হওয়ার কবলে পরে। চাকুরীর নামে বরিশালে কিংবা ঢাকার বিভিন্ন যায়গায় পাঠনো হচ্ছে নাড়ি ও শিশুদের।

এদিকে দপদপিয়া ফেরিঘাটের আগে মেসার্স ‘খান এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি বালু সিমেন্টের দোকান রয়েছে। এর মালিক তিমিরকাঠী গ্রামের মুনসুর খানের পুত্র খোকন (৪০)। সাইনবোর্ডে নানান সামগ্রী বিক্রির কথা লেখা থাকলেও আসলে দোকানে তা কিছু নেই। এই দোকানকে পুজি করে তার আড়ালে অবৈধ নারী ব্যবসা পরিচালনা করছেন দোকান মালিক খোকন খান।

গত ১৪ জুন এমন ঘটনার শিকার হন দপদপিয়া এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী মনি বেগম। আর্থিক অসচ্ছলতার সুযোগে চাকুরী দেওয়ার নাম করে তাকে বরিশাল নিয়ে আসে খোকন খান। রুপাতলী মোল্লা মার্কেটে ‘চন্দ্রদ্বীপ ডেন্টাল কেয়ার’ এর দন্ত ডাক্তার শহীদের কাছে চাকুরীর জন্য নিয়ে আস হয়। শহীদ চাকুরী প্রার্থীর ইন্টারভিউ গ্রহন করে ঈদের পরেই জয়েন্ট দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেয়। এর পর আগের প্লান মত শহীদ ও খোকন মিলে মনি বেগমকে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে মনি বেগম রাজি না হলে তাকে গালাগালি শুরু করে। মনি বেগম সবার কাছে বলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। এক পর্যায়ে রাত প্রায় ৯টা। বাড়ি ফেরার পথে খোকনের মটরসাইকেলের পিছনে মনি বেগমকে বসানো হয়। বাড়ি গিয়ে লোকজনের কাছে সব বলে দিলে ফাঁস হয়ে যেতে পারে ভেবে চলন্ত গাড়ি থেকে খোকন মনিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে মনি বেগম মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়ে পরে কাতরাতে থাকে। পথচারীরা দেখে মনি বেগমকে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। যার রেজি: নং ৯৩২১৬/২৩৪। এরপর সিটি স্ক্যান সহ সব পরীক্ষা নীরিক্ষা করে চিকিৎসায় প্রায় ১৪ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে প্রানে বেচে যায় মনি বেগম। তার কাছ থেকেই জানা যায় সব কথা। এ ব্যাপারে মনি বেগমের বড় ভাই আলাউদ্দিন জানান, দপদপিয়ার খোকন ও রূপাতলীর দন্ত ডাক্তার শহীদ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। তারা দীর্ঘদিন যাবত এসব অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত। এই এলাকার অসংখ্য নাড়িকে আর্থিক অসচ্ছলতার সুযোগে তার ব্যবসার পন্য বানিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। আমার বোনের বেলায় সেভাবে চেস্টা করেছিল। আর তার গডফাদার হিসেবে কাজ করে দন্ত ডাক্তার হিসেবে খ্যাত শহীদ। আসলে তারা দুজনে মামাতো ফুফাতো ভাই। সমাজে মুখোশের আড়ালে এভাবে তাদের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে তারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোয়ার বাইরে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খোকন খান বলেন, আমার ক্ষমতা আছে বিধায় কিছু মানুষকে চাকুরী দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। পারলে কেউ আমার বিরূদ্ধে মামলা করুক। আমি বুঝিয়ে দেব কত ধানে কত চাল। অপর পার্টনার দন্ত ডাক্তার শহীদ বলেন, আমার কাছে শুধু মনি বেগমকেই চাকুরীর জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। ইতিপূর্বে অন্য কোন ঘটনায় আমি জড়িত নই।

এ ব্যাপারে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here