bhola-englishশিপুফরাজী, ভোলা দক্ষিণ প্রতিনিধি :: চরফ্যাশনে চাঁদাবাজি মামলার বাদিকে রাস্তা থেকে ধরে যুবতীসহ পুলিশে দিয়ে ধর্ষণ মামলায় আদালতে সোপর্দ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যুবতীসহ ওই যুবককে থানা হাজতে ২দিন আটক রাখার পর পুলিশের কারিশমায়  এবং চাঁদাবাজি মামলার আসামীদের সহায়তায় বাবা ও ছেলেদের বিরদ্ধে এমন মামলা দায়ের করা হয়েছে ।

তিবর্কিত এই মামলায় কালের কন্ঠের সাহিত্য সম্পাদক মাসুদ হাসান, তার ছোট ভাই মহিবুল্যাহ এবং অবসর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক বাবা আবুল কালাম মাষ্টারকে আসামী করা হয়েছে।

গত ৭ ডিসেম্বর রাত পৌনে ন’টায় শশীভূষণ থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানাযায়, কথিত ভিক্টিম স্থানীয় মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী। সিঙ্গাপুর ফেরৎ যুবক মহিবুল্যাহ একই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিৰক আবুল কালাম মাষ্টারের পুত্র।

দীর্ঘদিন ধরে মহিবুল্যাহ ভিক্টিমকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রস্তাব ও লোভ লালসা দিয়ে কলাকৌশলে রাজিও করে। যারসূত্র ধরে ৩০ নভেম্বর  রাত সারে ৯টায় মহিবুল্যাহ ভিক্টিমের পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামের বাড়িতে পাকের (রান্নার ঘর) ঘরে ঢুকে  কাজি ডেকে বিয়ে করে রাতেই বউ বানিয়ে ঘরে তুলে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে ভিক্টিমকে যৌন মিলনের প্রস্তাব দেয়।

ভিক্টিম প্রস্তাবে রাজি না হলে ঘরের মাটিতে শোয়াইয়া ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনার পর বাদি হাবিব উল্যা  বিষয়টি আসামী মাকসুদ মিয়া এবং আবুল কালাম মাষ্টারকে জানাইলে তারা আসামী মহিবুল্যাহকে এলাকা হইতে পালাইয়া যাইতে সাহায্য করে।

কথিত ভিক্টিমের দাদা হাবিব উল্যা বাদি হয়ে শশীভূষণ থানায় ৭ ডিসেম্বর রাত পৌনে ন’টায়  মামলাটি দায়ের করেন বলে থানাসূত্র থেকে জানান হয়েছে।

এদিকে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শশীভূষণ থানা হাজতে আটক মহিবুল্যাহ এই প্রতিনিধিসহ স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের জানান, তিনি শশীভূষণ থানার একটি চাঁদাবাজি মামলার বাদি। ৬ ডিসেম্বর (শনিবার)সন্ধ্যার পর স্থানীয় দৌলতপুর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে চাঁদাবাজি মামলার আসামী ইউপি মেম্বার ট্যারা নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে ৫/৬ জন তাকে (মহিবুল্যাহ)কে রাস্তা থেকে ধরে পাশের হাবিব উল্যার বাড়িতে নিয়ে যায়। এখানে হাবিব উল্যার প্রবাসী পুত্র কামাল উদ্দিনের মাদ্রাসা পড়ুয়া যুবতীকন্যার সাথে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ তুলে পুলিশ ডাকা হয় এবং যুবতীসহ মহিবুল্যাহকে পুলিশে তুলে দেয়া হয়।

শশীভূষণ থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুস সোবহান শনিবার রাত ৯টার দিকে বিপুল সংখ্যক উৎসুক গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে কথিত ভিক্টিমসহ মহিবুল্যাহকে থানায় নিয়ে আসেন। থানায় পুলিশ হাজতে ২দিন আটক রেখে আসামীরা পুলিশের সহায়তায় চাঁদাবাজি মামলাটি তুলে নিতে মহিবুল্যাহকে চাপ দিতে থাকে এবং মামলা তুলে নিতে রাজি না হলে ভিক্টিমকে দিয়ে ধর্ষণ মামলা দেয়ার হুমকী দেয়া হয়।

কথিত ভিক্টিমসহ মহিবুল্যাহকে দু’দিন থানায় আটক রেখে সুরাহার জন্য থানায় ওসির কক্ষে দফায় দফায় সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মহিবুল্যাহ তার চাঁদাবাজি মামলাটি তুলি নিতে অস্বীকার করায় রোববার মধ্যরাতে সর্বশেষ সমঝোতা বৈঠক ব্যর্থ হয়।

এই বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পরই চাঁদাবাজি মামলার প্রধান আসামী ট্যারা নরুল ইসলাম তার ভায়রার মেয়ে কথিত ভিক্টিমকে বাদি করে শশীভূষণ থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

মামলায় চাঁদাবাজি মামলার বাদি মহিবুল্যাহ, তার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক বাবা আবুল কালাম মাষ্টার এবং বড় ভাই কালের কন্ঠের সাহিত্য সম্পাদক মাসুদ হাসানকে আসামী করা হয়েছে। দু’দিন ধরে থানা হাজতে আটক মহিবুল্যাহকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

ডাকতারী পরীক্ষার জন্য কথিত ভিক্টিমকে ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শশীভূষণ থানার অফিসার ইন চার্জ সামসুল আরেফিন বলেছেন, স্থানীয় লোকজন ছেলে মেয়েকে ধরে পুলিশে দিয়েছে। পুলিশ বাদির এজহারের ভিত্তিতে মামলা নিয়েছে। এজাহারে কম বেশী ভুল ত্রুটি থাকলে তদন্তকালে দেখা হবে। মহিবুল্যাহকে দু’দিন থানা হাজতে আটক রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, সমঝোতার স্বার্থেই তা করা হয়েছিল।

 

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here