তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে ‘মরা’ ইস্যু উল্লেখ করে আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, সংসদে এই ইস্যুতে সরকার কোনো দাবি উত্থাপন করবে না। কিছু করতে চাইলে অধিবেশনে অংশ নিয়ে বিএনপিকেই তা করতে হবে।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বঙ্গবন্ধু একাডেমির এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সংগঠনের মহাসচিব হুমায়ূন কবির মিজির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সতীশ চন্দ্র রায়, কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ করিম, কবি আব্দুল খালেদ, হাবিবুর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

সংসদ নিয়ে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুকের বক্তব্যকে বিএনপির সংসদে ফেরার আকুতি উল্লেখ করে কামরুল বলেন, বিএনপিকে সংসদে আনতে সরকার সব কিছুই করেছে। তারা আসেনি। এখন সংসদে ফেরার দায়িত্ব বিএনপিরই।

তিনি বলেন, বিএনপি সংসদে আসতে চাইলে তাদের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। তবে কী বিষয়ে আলোচনা করবে তা তাদেরই নির্ধারণ করতে পারবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ইস্যুতে প্রতিমন্ত্রী বিএনপিকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, বিএনপি চাইলে বেসরকারিভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখা না রাখা নিয়ে সংসদে দাবি আনতে পারে। তবে সরকার এই মরা ইস্যুতে কোনো আলোচনা করবে না।

তিনি বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আন্দোলনের ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে তারা বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাবে এই নিশ্চয়তা কোথায় পেলেন তারা?

তিনি আরো বলেন, বিএনপি আসলে আন্দোলনে নেমেছে যুদ্ধাপরাধ, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা আর দুর্নীতিবাজ ছেলেদের রক্ষায়। এতে তারা সফল হবে না। আন্দোলন করে তারেককে রক্ষা করা যাবে না। রক্ষা করতে হলে আইনি লড়াইয়ে আসতে হবে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ্য করে কামরুল বলেন, ‘তিনি (মওদুদ) আওয়ামী লীগে কোন্দলের কথা বলছেন। এটা তার মত বহুরূপী মানুষের মুখে মানায় না। তিনি সব দলের জল খেয়ে এখন বিএনপির ঘাড়ে সোয়ার হয়েছেন।’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে কোনো কোন্দল নেই। যা দু-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে- তা নেতারা নিজেদের আত্মসমালোচনা করেছেন। আওয়ামী লীগে এই সংস্কৃতি দীর্ঘদিনের, যেটা বিএনপির নেই।

কামরুল দাবি করেন, আওয়ামী লীগ এখন নিবেদিত সত্যিকার আওয়ামী আদর্শের লোকদের দিয়েই পরিচালিত হচ্ছে। যেসব মুখোশধারী, বহুরূপী ছিল, তারা ১/১১’র পর দল থেকে ছিটকে গেছেন।

উল্টো তিনি বলেন, বিএনপির জন্ম ষড়যন্ত্রের চোরা গলিতে। তারা দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসে লিপ্ত। এই ককটেল পার্টি এদেশে টিকতে পারবে না। অচিরেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

প্রধান দুদলের দুই নেত্রীর সংলাপ প্রসঙ্গে সুশীল সমাজের দাবি প্রেক্ষাপটে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘দুই নেত্রীর আলাদা বৈঠকের কোনো প্রয়োজন নেই। সংসদে তারা সামনা-সামনি বসেন। সংসদে এসে বিএনপি প্রধান আলোচনায় অংশ নিলেই যেকোনো ইস্যুতে মতক্যৈ সম্ভব। তবে তা বিএনপিকেই আগে করতে হবে।’

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারক নিজামুল হক নাসিমকে নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা করবে না তো মুক্তিযুদ্ধেরবিরোধীরা করবে? ব্যারিস্টার মওদুদকে ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারক আর আব্দুর রাজ্জাককে প্রসিকিউটর নিয়োগ করলে কী তারা খুশী হবেন?’

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here