ঢাকা: জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে।
সকাল ৯টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
তার বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় ঘোষণা করা হবে রোববার।
মামলাটি আজ ট্রাইব্যুনালের কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে।
মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ ১৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা হিসাবে পরিচিত মীর কাসেম আলী ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম শহরে ক্যাম্প স্থাপন করে বিভিন্নভাবে স্থানীয় লোকজনের ওপর নির্যাতন চালান। ১৪টি অভিযোগের মধ্যে আটক, নির্যাতন, হত্যা ও হত্যার পর কর্ণফুলী নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেয়াসহ ১২টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন প্রসিকিউটররা।
শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজ বলেন, নির্যাতনের যে ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে তা থেকে আমরা সন্দেহাতীতভাবে তার বিরুদ্ধে আনা ১২টি অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। তাই আমরা মীর কাসেম আলীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেছি।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, প্রসিকিউশন যে সব ডকুমেন্ট দাখিল করেছেন সেখান থেকেই প্রমাণ হয় সেগুলো একটিও তার বিরুদ্ধে টিকে না। যেসব অপরাধের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো ৬ নভেম্বর ১৯৭১ সালের ঘটনা। যে সময় মীর কাসেম আলী ঢাকায় ছিলেন।
মীর কাসেম আলী জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। ইবনে সিনা ট্রাস্টি বোর্ডেরও একজন সদস্য তিনি। ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ছিলেন তিনি।
জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে গত বছর ১৭ জুন গ্রেপ্তার করা হয়।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মামলার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে রায়টি অপেক্ষমান রাখেন। মামলাটি প্রথমে ট্রাইব্যুনাল-১-এ ছিল। পরে তা ট্রাইব্যুনাল-২-এ স্থানান্তর করা হয়।
দলের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়ায় দুই দফায় ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে জামায়াত।
বৃহস্পতিবার চলে প্রথম দফার হরতাল। রোববার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফায় ৪৮ ঘণ্টার হরতাল। সেই হরতালের মধ্যেই মীর কাসেমের রায় দেয়া হচ্ছে আজ।