শাহারিয়ার রহমান রকি, ঝিনাইদহ                 

দলবাজী ও তদ্বীরের কাছে মেধা মুল্যহীন। মামা খালু ও ক্ষমতা প্রভাবের জোর যাদের আছে কেবল তারাই এবার ঝিনাইদহ সরকারী উচ্চ বালক ও বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সুযোগ পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার ঐতিহ্যবাহী দুটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিয়ে সারা শহরে হৈচৈ পড়ে গেছে।

অভিভাবকরা দেরীতে ফল প্রকাশের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়। কিন’ সমালোচনা, ক্ষোভ ও অসনে-াষের হাত থেকে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা রেহাই পাচ্ছেন না। সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে রাস-াঘাটে, হাটে বাজারে ও চায়ের ষ্টলে।বাদ যাচ্ছেনা কোথাও।

অভিযোগ উঠেছে ভর্তি পরীক্ষা অনেকটা ছিল লোক দেখানো। শহরের বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের ফাষ্ট বয়রাও এবারের ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ভর্তি পরীক্ষার পর গত বুধবার রাতে মেধাতালিকা প্রনয়নের সময় সরকারীদলের নেতাকর্মী ও জনৈক সংসদ সদস্যের উপসি’তির ফলে প্রশাসনের দাবী করা ‘ফেয়ার’ কার্যক্রমটি বিতর্কিত হয়ে যায়।

তালিকা থেকে মেধাবীদের বাদ দিয়ে শাসকদলের নেতাকর্মীদের ভাই, ভাতিজা, সন-ান ও নিকটাত্মীয়দের স’ান করা হয় বলেও শহরে ব্যপক ভাবে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। আর এতেই সরকারী বালিকা ও বালক বিদ্যালয়ের সামনে অপেক্ষমান অভিভাবকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। তার জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জন্য দু একটি শ্লোগান দেবার পর পরই পুলিশ পরিসি’তি সামলে নেয়।

শহরের পাগলাকানাই এলাকার নাসরিন নামে এক অভিভাবক জানান, তাদের পাড়ায় যাদের সন-ানরা ভর্তির সুযোগ পেয়েছে তারা সবাই তদ্বীর করে। তিনি অভিযোগ করেন র‌্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীতে চাকরী করা এবং যারা সরকারী দল করেন তাদের আত্মীয় স্বজনরাই স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।

শহরের উপশহর পাড়ার এক গৃহবধু জানান, তার মেয়ে অত্যন- মেধাবী। কিন’ তাদের তদ্বীরের লোক নেই বলে তার মেয়ে ভর্তি হতে পারেনি। তিনি কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে বলেন এদের সন-ানরা ভর্তি হতে পেরেছে তদ্বীরের জোরে।
ব্যাপারীপাড়ার গৃহবধু রোজিনা জোয়ারদার বলেন, তাদের পাড়ায় যে সব ছেলে মেয়ে ভর্তি হয়েছে সবাই সরকারী দলের সমর্থনে।

এ ভাবে চাকলাপাড়া, আরাপপুর, হামদহ, মডার্নপাড়া, কাঞ্চননগর, আদর্শপাড়া, কোটপাড়াসহ অনেক মহল্লার অভিভাবকরা তাদের ক্ষোভের কথা সাংবাদিকদেরকে জানান।
এদিকে অভিভাবক ও রাস-াঘাটে চলা সমালোচনা মানতে রাজি নয় ভর্তি কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সম্পূর্ন মেধার ভিত্ত্বিতে নিরপেক্ষ ভাবে ভর্তি পরীক্ষা ও মেধা তালিকা প্রনয়ন করা হয়েছে। এখানে কোন ব্যাত্যয় ঘটেনি। তিনি জানান অনেক সরকারী দলের নেতা আমাদের প্রতি নাখোশ হয়েছেন, আমরা তাদের সুপারিশ মানতে পারেনি বলে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সরকারী বালক বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষক আজগার আলী সাংবাদিকদের জানান, ভর্তির বিষয়টি আমাদের হাতে ছিল না। তবে শহরে যে সমালোচনা হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে তিনি দাবী করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here