ঝিনাইদহ: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহের চারটি আসন থেকে বর্তমান ৪ এমপিসহ ৩৯ জন সম্ভাব্য প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্র ও মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে ঝিনাইদহের রাজনীতিতে অপরিচিত ও জনবিচ্ছিন্ন অন্তত দেড় ডজন আওয়ামী লীগ নেতা দলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

সুযোগ সন্ধানী এসব নেতার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের খবর শুনে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে থাকা কর্মীদের চোখ ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম। একইভাবে তাদের কারণে বিব্রতবোধ করছেন যোগ্যতাসম্পন্ন নেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহের ৪টি সংসদীয় আসনে মনোনয়ন পেতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অনেক আগে থেকেই কেন্দ্রে যোগাযোগসহ মাঠ পর্যায়ে নানা কার্যক্রম শুরু করেছেন। মনোয়নপত্র সংগ্রহের তালিকায় প্রবীণদের পাশাপাশি এগিয়ে রয়েছেন তরুণ প্রার্থীরাও।

ঝিনাইদহ-১ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১০ জন সম্ভাব্য প্রার্থী। তাঁরা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাই, শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবেদ আলী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তৈয়ব আলী জোয়ার্দ্দার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল ইসলাম রাজু, সাবেক যুগ্ম সচিব মীর শাহাবুদ্দিন, ঢাকার মিরপুর আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আজাদ, সুপ্রিম কোর্টের সহকারী এটর্নি জেনারেল এ্যাড.মাসুদ রুমী, সাবেক যুবলীগ নেতা অধ্যক্ষ বাদশা আলম ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শামসুল ইসলাম জোহা।

ঝিনাইদহ-২ দলের মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন ৮ জন সম্ভাব্য প্রার্থী। তাঁরা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কনক কান্তি দাস, ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র জেলা আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেএম রশিদুল আলম রশিদ, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নুরজাহান বেগম ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আফজাল হোসেন।

ঝিনাইদহ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন ১৩ জন। তাঁরা হলেন, বতর্মান সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট শফিকুল আজম খাঁন চঞ্চল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান, মহেশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শাহাজালাল ইসলামী ব্যংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাজ্জাতুয জুম্মা, মহেশপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ময়জদ্দীন হামীদ, ঝিনাইদহ জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি ও এসবিকে ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ নবী নেওয়াজ, সাবেক যুবলীগ নেতা আজিবার রহমান মহন, কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুনেচ্ছা মিকি, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক রেজাউল করিম টিটন, এমএ জামান মিলাত, এ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান প্রিন্স ও এ্যাডভোকেট জিহাদ।

ঝিনাইদহ- ৪ আসনে মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন ৮ জন। তাঁরা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আজিম আনার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্কাস আলী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী ঠাণ্ডু, জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার সউদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ডা. রাশেদ শমসের, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ও কালীগঞ্জ পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু ও বাস্তুহারা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন বাবু।

এসব প্রার্থীদের মধ্যে এলাকার রাজনীতিতে একবারেই নতুন এবং জনবিচ্ছিন্ন অনেকে দলের মনোনয়ন ক্রয় করায় নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে। ৩৯ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে দেড় ডজন নেতার এলাকার মানুষের সাথে কোনো যোগাযোগই নেই। মনোনয়ন ক্রয় করে লাইম লাইটে আসতে চেষ্টা করছেন তারা। সুযোগ সন্ধানী এসব নেতাদের কারণে জনপ্রিয় নেতারা অস্বস্তিবোধ করছেন।

আহমেদ নাসিম আনসারী/

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here