জোড়া মাথার যমজ শিশু নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই শিক্ষক দম্পতিরকলিট তালুকদার, পাবনা প্রতিনিধি :: যমজ সন্তান নিয়ে উৎসাহ-আগ্রহের কমতি থাকেনা স্বজন ও প্রতিবেশিদের। কিন্তু জোড়া মাথার যমজ শিশু সেই আগ্রহের পরিবর্তে নিয়ে এসেছে নিরানন্দ। পাবনার চাটমোহরে এক শিক্ষক দম্পতির সংসারে এক বছর আগে জন্ম নেয় জোড়া মাথার যমজ কন্যা শিশু। ঘরে নতুন অতিথি আসলেও স্বজন-প্রতিবেশিদের মাঝে নেই আনন্দ। দিন যত যাচ্ছে ততই দুশ্চিন্তা ভর করছে সবার মনে। তাদের আশা, অপারেশনের মাধ্যমে জোড়া মাথা আলাদা করা গেলে আনন্দে ভরে উঠবে পরিবার। তাই ঝুুঁকিপূর্ন ও ব্যয় বহুল অপারেশনে সরকারি-বেসরকারি সহায়তা চাইলেন শিক্ষক দম্পতি।

দেখে মনে হবে দু’টি ফুটফুটে কন্যা শিশু ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তারা জোড়া মাথার যমজ শিশু। চাটমোহর উপজেলার আটলংকা গ্রামের শিক্ষক দম্পতি রফিকুল ইসলাম-তাসলিমা খাতুনের সন্তান রাবেয়া-রোকাইয়া। ২০১৬ সালের ১৬ জুন সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম হয় এই মাথা জোড়া যমজ কন্যার। বর্তমানে তাদের বয়স এক বছর।

এই দম্পতির সংসারে সাড়ে ৬ বছরের আরো একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বাভাবিক শিশুর মতো আচরণ এই জমজ শিশুর। স্বপ্ন ছিল সুস্থ্য, স্বাভাবিক শিশু নিয়ে আনন্দে ভরে উঠবে সংসার। কিন্তু মাথা জোড়া থাকায় তাদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে শিক্ষক দম্পতি বাবা-মা’র। দিন যত যাচ্ছে, ততই শঙ্কা বাড়ছে তাদের।

জোড়া মাথার যমজ শিশু নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই শিক্ষক দম্পতিরমাথা জোড়া যমজ শিশুর বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা সিজার করার আগেরদিন পর্যন্ত জানতে পারিনি যে, পেটের মধ্যে এমন যমজ শিশু আছে। এমনকি ডিজিটাল আলট্রাসনোগ্রাফী করা হলে তাতেও ধরা পড়েনি। আমরা চেয়েছিলাম সুস্থ্য সুন্দর ভাল একটা বাচ্চা। কিন্তু এটা আশা করিনি এমন ধরনের বাচ্চা হবে। যদি শিশু দু’টির মাথা অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করা যায় তাহলে খুব ভাল হয়।

রফিকুলের স্ত্রী তাসলিমা খাতুন জানান, মাথা জোড়া হলেও তাদের বর্তমান সময় পর্যন্ত আচরণ স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা তো হয়ই। খাওয়ানো, গোসল করা, কোলে রাখা, উঠাবসা সবকিছুতে অস্বস্তি কাজ করে। এখন কষ্ট করে হলেও তাদের লালন পালন করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় তাই আমাদের আশা, সরকারি বা বেসরকারি সহায়তায় সুচিকিৎসায় যদি তাদের জোড়া মাথা আলাদা করা যেতো তাহলে আমাদের জন্য সবচেয়ে খুশির খবর হবে।

প্রতিবেশিরা জানান, মাথা জোড়া যমজ শিশু রাবেয়া-রোকাইয়ার মতো ফুটফুটে বাচ্চাদের এমন অবস্থা মেনে নেয়া কষ্টের। পরিবারটির কষ্টের কথা ভাবা যায়না। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে পরিবার ও প্রতিবেশিদের মুখে হাসি ফুটবে।

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ স. ম. বায়েজীদ উল ইসলাম জানান, জন্মগত ত্রুটির কারণে জোড়া মাথার যমজ শিশুর জন্ম হয়। ভালভাবে পরীক্ষা নীরিক্ষার পর বোঝা যাবে তাদের মাথা আলাদা করা যাবে কিনা। তিনি বলেন, অপারেশনের মাধ্যমে শিশু দু’টিকে আলাদা করা ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ন। ঢাকায় নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here