জেলা প্রশাসকের লাথিতে দোকানি আহত

সাজিদ হাসান, বান্দরবান প্রতিনিধিঃ বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক দোকানিকে লাথি মেরে আঘাত করেছে বলে অভিযোগ করে এক আদিবাসী ২৩ জানুয়ারি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব বরাবরে সুবিচার পাওয়ার আশায় অভিযোগ পাঠিয়েছেন।

উক্ত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ বছর ধরে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ৫শ টাকা ভাড়া প্রদানের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের পরিচালিত মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের পাশে দোকান করে আসছি। সেখানে ভাড়া নিয়ে দোকান করছেন আরো ১০জন ব্যবসায়ি। গত ৪ জানুয়ারি দুপুরে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক। এসময় পর্যটকদের ফেলা আবর্জনা দেখতে পেয়ে ক্ষুদ্র জেলা প্রশাসক আবর্জনার বিষয় ও কার অনুমতিতে দোকান দেওয়া হয়েছে জানতে চান।

আরো জানা গেছে, অভিযোগকারী পর্যটকদের ফেলে যাওয়া আবর্জনা অন্যদিনের মতো পরিষ্কার করবো বললেও এই সময় জেলা প্রশাসক মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের ভেতরে ময়লা পরিষ্কার নিয়ে দোকানির উপর চড়াও হয়ে লাথি, কিল, ঘুষি মারেন। এতে দোকানির তলপেটে ও কন্ডকোষে আঘাত লাগায় তিনি আহত হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের ভেতরে অন্যদের মতো গরীব আদিবাসীদের কয়েকটি দোকান রয়েছে। তারা ফলমূলসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করে থাকেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম পর্যটন স্পট মেঘলা পরিদর্শনে যান। ডিসি পরিদর্শনে গিয়ে দোকানের একটু দূরে ময়লার স্তুপ দেখতে পান। দোকানি বিনয়লাল তঞ্চঙ্গ্যাকে ডেকে পাঠান। ডিসি’র সামনে আসার পর রাগান্বিত হয়ে কেন ময়লা আছে জানতে চান বিনয়লালের কাছে। এসময় লাথি, কিল, ঘুষি মারতে থাকেন। ডিসি’র সঙ্গে থাকা বডিগার্ড ফয়েজ আহম্মদও ডিসিকে বারবার থামানোর চেষ্টা করেন।

অভিযোগকারী বিনয় লাল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, স্যার (ডিসি) ময়লা কেন পড়ে আছে জানতে চান। আমি নমস্কার দিয়ে ময়লাগুলো সন্ধ্যায় পুড়িয়ে ফেলবো বলার পর হঠাৎ চড়াও হয়ে আমাকে একের পর এক কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকেন স্যার। আমাকে এক নাগাড়ে তলপেট ও অন্ডকোষে আঘাত করলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ওইদিন সন্ধ্যায় বান্দরবান সদর হাসপাতালের সাবেক আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: মং উসা থোয়াই এর কাছে চিকিৎসা গ্রহন করি।

প্রত্যক্ষদর্শী দোকানি রিয়া তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ডিসি স্যার ক্ষুব্দ হয়ে বিনয়লাল তঞ্চঙ্গ্যাকে লাথি, কিল ও ঘুষি মারতে থাকেন। তাকে বাঁচানোর জন্য চুমকি বম, রতনসহ আমরা কয়েকজন ডিসি’র পায়ে পর্যন্ত ধরি, তারপরও রেহাই পায়নি বিনয়। এক পর্যায়ে লাথির আঘাতে জঙ্গলে পরে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন বিনয়লাল।

এ ব্যাপারে যোগাযোগের জন্য জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলামের দুইটি নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, মারার দরকার হলে পুলিশকে খবর দিব, আমি এখানে চাকরি করতে এসেছি, মানুষ মারতে আসিনি।

প্রসঙ্গত, এর আগে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের লেক থেকে মাছ চুরি করে বিক্রির মিথ্যা অভিযোগে জেলা প্রশাসক কর্তৃক জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তাকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সবার সামনে লাঞ্চিত করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here