ডেস্ক নিউজ:

 

সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার অবৈধ- এমন মন্তব্য করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এই সরকারের নির্দেশে প্রশাসন জনগণের ওপর জুলুম করলে এর পাল্টা ব্যবস্থা ন্যায়সংগত হবে।

১৮ দলের ডাকে টানা ৮৪ ঘণ্টার হরতালের শেষ দিন বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যাললয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পরই সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রীদের পদ শূন্য হয়ে গেছে। কিন্তু সরকার এখন নিজেদের অবৈধ অস্তিত্ব বুঝতে পেরে নানা কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এই সরকার আইন-কানুন-নিয়ম মানতে অপারগ।

বর্তমান সরকারের মন্ত্রীদের যেকোনো নির্দেশ অবৈধ বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, প্রশাসনের যারা তাদের নির্দেশ মান্য করবেন, তাও হবে অবৈধ। অবৈধ নির্দেশে জনগণের  ওপর চালানো জুলুমের পাল্টা ব্যবস্থা ন্যায়সংগত হবে। তাই মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ কর্মকর্তাদের মন্ত্রীদের কথা অনুযায়ী কাজ না করার অনুরোধ জানান রিজভী।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী আহমেদ বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম সজীব ওয়াজেদ জয় বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির বাইরে ভিন্ন কথা বলবেন। কিন্তু তার মুখে বিরোধী দলকে নিয়ে যে কথা শোনা যাচ্ছে, তা আওয়ামী লীগের পুরনো ধাঁচের সংস্কৃতি। তিনি মায়ের মতো কথা না বলে বাবা ড. ওয়াজেদ মিয়ার মতো কথা বললে তা গ্রাহ্য করা যেত।”

প্রশাসন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, “দলীয়ভাবে সাজানোর কারণে প্রশাসন এখনো নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। তারা মনে করছে, সরকার টিকে থাকলে তারাও টিকে থাকবে। আর বিশেষ অঞ্চল ও বিশেষ আদর্শের লোক বলে তারা সরকারের কথা অমান্য করছে না। কিন্তু এভাবে কত দিন সহ্য করা হবে!”

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সরকার নিজেদের নিজের প্রয়োজনে সংবিধান কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলে, আবার নিজেদের ইচ্ছায় জোড়া লাগায়। তারা জনগণের কোনো মতামতই তোয়াক্কা করছে না। এত কাটাছাঁটার পরও যতটুকু সংবিধানের মর্যাদা আছে, সেটিকেও অবজ্ঞা ও তাচ্ছিল্য মন্ত্রিপরিষদের পদত্যাগ নিয়ে আমরা সেই অবজ্ঞারই প্রতিফলন।”

রিজভী অভিযোগ করেন, “পুলিশ বাহিনীর ছত্রচ্ছায়ায় আজও যুব-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সশস্ত্র  হামলা চালায়। বুধবার বিএনপির তিন মহিলা এমপি দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ তাদের বিনা কারণে আটক করে। এসব ঘটনা দেখে মনে হয় আমরা এখন এক উছৃংখল পুলিশি রাষ্ট্রে বাস করছি।”

বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব জানান, হরতাল পালন করতে গিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার পর্যন্ত সারা দেশে আহত হয়েছেন এক হাজার ১০০ জন এবং গ্রেফতার হয়েছেন চার শতাধিক নেতাকর্মী। ভ্রাম্যমাণ আদালত দুজজনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দিয়েছেন।

গত রোববার শুরু হওয়া ৮৪ ঘণ্টার হরতালে শেষ দিন বুধবার পর্যন্ত নিহত হয়েছেন দুজন, গ্রেফতার হয়েছেন দুই হাজার ১১০ জন, আহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৪০০ জনের বেশি। এ ছাড়া ২১ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। ভ্রাম্যমাণ আদালত ২১ জন নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here