জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্তৃক দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার জাবি প্রতিনিধি আহমেদ রিয়াদ নির্যাতিত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকরা। বুধবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে গিয়ে উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে তার একানত্ম ব্যক্তিগত সচিবের কাছে এই স্মারকলিপি জমা দেয় তারা। বত্রিশজন সাংবাদিক সাড়্গরিত স্মারকলিপিতে আহমেদ রিয়াদের উপর হামলাকারীদের স্থায়ী বহিষ্কার, আহমেদ রিয়াদের সার্বিক ক্ষতিপূরণ, গত ২০ অক্টোবর, ২০১১ তারিখে সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয়ে দেওয়া অভিযোগের বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্মরত সকল সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবী করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে পূর্ব শত্রম্নতার জের ধরে দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার জাবি প্রতিনিধি আহমেদ রিয়াদকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ তম ব্যাচের ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিড়্গার্থী। আহত রিয়াদ ও প্রত্যড়্গদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে পূর্বশত্রম্নতার জের ধরে খেলাধুলাকে ইস্যু করে সাথে মাওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগকর্মী পারভেজ আহমেদের (ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগ, ৩৯ তম ব্যাচ) সাথে রিয়াদের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে পারভেজের নেতৃত্বে শহীদ রফিক-জব্বার হলের ৪০তম ব্যাচের ছাত্রলীগ কর্মী রোজেন, সোহেল, শামীম ও পিয়াস ক্রিকেট স্ট্যাম্প ও ব্যাট নিয়ে ধাওয়া করলে রিয়াদ দৌড়ে মাঠ সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সোহেল ও মামুনের খাবার দোকানে আশ্রয় নেয়। পরে ছাত্রলীগ কর্মীরা দোকানের ভিতের গিয়ে স্ট্রাম্প ও ব্যাট দিয়ে রিয়াদকে বেধরক মারধর করে এবং দোকান ভাংচুর করে। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিড়্গার্থীরা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা আজিমউদ্দিন রিয়াদকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর চিকিৎসকরা রিয়াদকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানানত্মর করে। এ বিষয়ে এনাম মেডিকেলের চিকিৎসক জিসান হোসেন বলেন, তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচন্ড আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ দিকে ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা মেডিকেলে দেখতে যায় আহমেদ রিয়াদকে। এসময় প্রক্টর অধ্যাপক আরজু মিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্যাম্পাসের বাহিরে থাকায় সিদ্ধানত্ম নিতে পারছি না। তিনি আসলেই সিদ্ধানত্ম নেয়া হবে। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরম্নদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।

রিয়াদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নিয়ে বেশ কয়েকটি অনুষন্ধানী প্রতিবেদন করায় ছাত্রলীগ ব্যাক্তিগত আক্রোশের কারনে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের প্রতি নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাবি ক্যাম্পাসসহ অন্যান্য ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/জাহিদ সুলতান লিখন/জাবি

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here