স্টাফ রিপোর্টার :: অপর্ণা ঘোষ। মডেল ও অভিনেত্রী। আগামী ৩ আগষ্ট কলকাতার ৩০ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত চলচ্চিত্র ‘ভুবন মাঝি’। ফাকরুল আরেফীন খান পরিচালিত এই ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন ফরিদা চরিত্রে। ছবিটি মুক্তি উপলক্ষে আজ তিনি কলকাতা যাচ্ছেন। কথা হলো তার সঙ্গে-
আপনার অভিনীত ‘ভুবন মাঝি’ চলচ্চিত্র কলকাতায় বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পাচ্ছে। কেমন লাগছে?
এটা সত্যি দেশের জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমাদের চলচ্চিত্র তো সাধারণত ওখানে তেমন একটা মুক্তি পায় না। আর ভারত যেহেতু আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একটা অংশজুড়ে রয়েছে, তাই কলকাতার বাঙালিদেরও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলাদা আবেগ কাজ করে। বাংলাদেশে ‘ভুবন মাঝি’ মুক্তি পাওয়ার পর থেকে কলকাতার অনেকেই ফেসবুক ইনবক্সে ছবিটি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আশা করছি ছবিটি ওখানকার দর্শকদেরও ভালো লাগবে।
কলকাতায় ছবিটির উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে থাকছেন?
অবশ্যই, আজই কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছি। ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ব্যানারে সেখানে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। ছবির কলাকুশলীরা সবাই প্রিমিয়ার শো একসঙ্গে দেখব।
গত সপ্তাহে তো ছবিটি নিয়ে লন্ডন ঘুরে এলেন। কেমন ছিল সেখানকার অভিজ্ঞতা?
যে কোনো ফেস্টিভ্যাল আমি ভীষণ উপভোগ করি। কারণ ফেস্টিভ্যালে নতুন মানুষদের সঙ্গে পরিচয় হয়, অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যায়। লন্ডনে গিয়ে আমাদের জয়শ্রী কবীরের সাথে দেখা হয়েছিল। এটা অনেক বড় পাওয়া। এর আগে কানাডাতে সাউথ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও অনেকের সঙ্গেই পরিচয় হয়েছিল যারা আমাদের ইন্ডাষ্ট্রিদ্বতে আগে কাজ করত। এবারের উৎসবে মেয়েদের জন্য আলাদা কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। সেখানে আমি আর জয়শ্রী কবীর অংশ নিয়েছিলাম। তার [জয়শ্রী কবীর] কেরিয়ারের নানান অভিজ্ঞতা শুনে নিজে আরও সমৃদ্ধ হয়েছি। সবমিলিয়ে লন্ডনের সময়গুলো দারুণ উপভোগ্য ছিল।
ছবিটি তো কালিকা প্রসাদকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তার সঙ্গে আপনার কোনো স্মৃতি মনে পড়ে?
মুক্তি দেওয়ার সময় কালিকা দাকে উৎসর্গ করার পরিকল্পনা ছিল; কিন্তু তার হঠাৎ চলে যাওয়াতে সবাই খুবই মর্মাহত হয়ে পড়েছিলাম। এরপর সিলেট, চট্টগ্রাম দেশের যেখানেই ছবিটি নিয়ে গিয়েছি, তাকে স্মরণ করেছি। তিনি তার গানের জন্য ছবিটির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবেন। কালিকা দার সাঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জমে আছে। শ্যুটিংয়ের সময় প্রত্যেকদিন গানের আসর বসত। কালিকা দা যেদিন প্রথম ‘আমি তোমারই নাম গাই’ গানটি শুনিয়েছিলেন সেদিনই ছবির চরিত্রের লাইন-আপ পেয়ে গিয়েছিলাম।
নতুন চলচ্চিত্রের কথা বলুন?
অনেকেই বিভিন্ন চলচ্চিত্রে অভিনয় করার জন্য অনুরোধ করে। আমাদের চলচ্চিত্র আসলে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই ভেবে-চিন্তে কাজ করতে চাই। তবে সম্প্রতি সরকারি অনুদানের একটি ছবিতে কাজ করার ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। গল্পও পছন্দ হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সবাই বিস্লারিত জানতে পারবেন।
আসছে কোরবানির ঈদে কোনো নাটকে কাজ করছেন?
এই ঈদে লন্ডনে থাকার কারণে খুব একটা কাজ করা হয়নি। আমার ফোন ভেঙে যাওয়ার কারণে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী ৯-১০ তারিখ সেতু আরিফের নির্দেশনায় একটি নাটকে কাজ করছি। সেটিতে একসঙ্গে দুটি চরিত্রে অভিনয় করব।
এই যে প্রতিদিনই কোনো না কোনো নাটক ও টেলিছবির কাজ করছেন কখনও বিরক্ত লাগে না?
অনেক কাজ করতে সত্যি একঘেয়েমি লাগে। একপ্রকার বাধ্য হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। বাজেট স্বল্পতার কারণে অনেক সময় ভালো প্রস্তুতি নিয়ে শ্যুটিং সেটে এলেও বেশিরভাগ সময় হতাশ হতে হয়। কারণ তড়িঘড়ি করে নির্মাতা শ্যুট শেষ করতে চায়। চরিত্র ধারণ করার জন্য সময়ের প্রয়োজন; কিন্তু কোনো শিল্পী সেটি পাচ্ছে না। ইন্ড্রাষ্ট্রির পুরো সিস্টেমটাই ওলটপালট হয়ে আছে। সিনিয়ররাও বিষয়টির দিকে ঠিকমতো নজর দিচ্ছে না। ভালো কাজের জন্য পরিবর্তন দরকার।