চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর তরুণী হত্যাডেস্ক নিউজ :: চলন্ত বাসের মধ্যে এক তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে জঙ্গলে লাশ ফেলে দেয়ার ঘটনায় পুলিশ মঙ্গলবার বাসটির চালকসহ পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ বলছে, টাঙ্গাইলের মধুপুরে এক তরুণীর মৃতদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছিল।

তাঁর আত্মীয়-স্বজন ছবি দেখে লাশ সনাক্ত করার পর তরুণীটিকে বাসের মধ্যে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ ও হত্যার এই ঘটনা ফাঁস হয়।

পুলিশ বাসটির চালকসহ ৫জনকে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার আদালতে হাজির করলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এ খবরটি প্রকাশ করেছে বিবিসি।

পুলিশ জানিয়েছে, টাঙ্গাইলের মধুপুরে রাস্তার পাশে জঙ্গল থেকে পুলিশ গত শনিবার সকালে তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার করার পর বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে।

এরপর সোমবার ঐ তরুণীর বড় ভাই পুলিশের কাছে তরুণীর মৃতদেহের ছবি দেখে তাঁকে শনাক্ত করেন। তখন পুলিশ তদন্ত করে ছোঁয়া পরিবহন নামের একটি বাসের চালক এবং হেলপারসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতদের তিনজন মঙ্গলবার টাঙ্গাইলের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মাহবুব আলম জানিয়েছেন, বাসটি বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় যাত্রী নেমেছে।

এরপর বাসে ঐ তরুণী ছাড়া আর কোন যাত্রী ছিল না। তখন বাসটি মধুপুরের জঙ্গলে দিকে রাস্তায় গিয়ে চলন্ত বাসেই ঐ তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। গ্রেফতারকৃতরা পুরো এই বর্ণনা দিয়েছে বলে পুলিশ সুপার উল্লেখ করেছেন।

“তরুণীর লাশ পাওয়া গিয়েছিল মধুপুরের জঙ্গলে। মৃতদেহের ছবি ফেসবুকে দেয়ার পর তার ভাই এসে শনাক্ত করে। আসামীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি ঘটনার সব আলামতও আমরা সংগ্রহ করেছি।”

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঐ তরুণীর বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশে।

বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে লেখাপড়া করার পর ঐ তরুণী একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করতেন। একইসাথে ঢাকায় একটি ল কলেজে পড়তেন।

এই তরুণীর বড় ভাই হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, তাঁর বোন শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে শুক্রবার বগুড়া গিয়েছিলেন।

সেখান থেকে সন্ধ্যায় এক সহকর্মীর সাথে কর্মস্থল ময়মনসিংহে যাওয়ার জন্য ছোঁয়া পরিবহনের বাসে উঠেছিলেন। তাঁর সহকর্মী টাঙ্গাইলে এলেঙ্গায় নেমে যান।

রহমান বলেছেন, তাঁর বোনের সাথে শুক্রবার রাত ১০:৩০ পর্যন্ত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল। এরপর বাসের হেলপার ফোন ধরে তা বন্ধ করে দিয়েছিল।

হাফিজুর রহমান বলেছেন, গ্রেফতারকৃতরা তাঁর বোনকে ধর্ষণের পর গলা টিপে এবং ঘাড় মটকে হত্যার যে বর্ণনা আদালতে দিয়েছে, আদালতে তা শুনে তিনি শিউরে উঠেছিলেন।

“এত নির্মমভাবে ধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যা করেছে। আদালতে আসামীরা যখন বর্ণনা দেয়, আমার তখন কলিজা ফেটে যাচ্ছিল। শুনে মনে হচ্ছিল, এরা পশুর চেয়েও অধম। এদের সর্বোচ্চ শাস্তি আমি চাই।”

মামলাটি দায়ের করেছে হাফিজুর রহমান। পুলিশ বলেছে এখন মামলায় অল্প সময়ের মধ্যে চার্জশিট দেয়া সম্ভব হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here