সাগরে ঘূর্ণিঝড় 'কায়ান্ট'শিপুফরাজী, চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি :: ঘূর্ণিঝড় কায়ান্টর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ভোলার চরফ্যাশন সহ আশপাশের এলাকায় আজ বুধবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। একইসঙ্গে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর পায়রা সমুদ্র বন্দরকে দুই নম্বর হুশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সৃষ্টি হওয়ায় জমিতে পেকে যাওয়া ধান ও সদ্য শীষ বের হওয়া ধান গাছ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় চরফ্যাশন উপজেলার হাজার হাজার কৃষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

চরফ্যাশন সদর জিন্নাগড় ইউনিয়নের কৃষক রনজিত দাস বলেন, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ায় আমরা চড়ম আতঙ্কে সময় পার করছি। আমার দুই একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল ৬২ জাতের ধান পেকে গেছে। আর কয়েকদিন পর তা কেটে ঘরে তুলব। এরমধ্যে যদি দুর্যোগ সৃষ্টি হয় তবে আমার জমির অন্তত ২৫ মণ পাকা ধানের অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এখন সামান্য বাতাসেই আমার জমির ধান হেলে পড়েছে। অপর এক কৃষক মো বশির মিয়া মিয়া বলেন, জমিতে ধানের গাছ থেকে মোচরা (ধানের শীষ) বের হতে শুরু করছে। এখন রাতের বেলা ধান শিশির গ্রহণ করার জন্য ফাঁক হয়ে যায়। যদি ঝড় ও প্রচুর বৃষ্টি হয় তবে ওই ধানে দুধ সৃষ্টি না হওয়ায় পরিপূর্ণ ধান (গোটা) সৃষ্টি হবে না। এখন যদি ঘূর্ণিঝড় কিংবা দুর্যোগ হয় তবে ধান আশানুরূপ হবে না, হবে চিটা আর চিটা একই শঙ্কা উপজেলার হাজারো কৃষকের মাঝে।

এ ব্যাপারে চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনতোষ বাবু বলেন, ইতিমধ্যে ধানের পরাগায়ণ হয়ে গেছে, এখন ধান গাছের শীষে দুধ সৃষ্টি হয়েছে একই সঙ্গে কিছু শক্ত গোটাও সৃষ্টি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে তেমন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। যদি ঘূর্ণিঝড় সরাসরি আমাদের অঞ্চলের ওপর দিয়ে যায় তখন কিছু ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতের পারে। আর যে ধান পেকে গেছে, সেগুলো থেকে কিছু ধান ঝরে যেতে পারে। তবে তেমন ক্ষতি হবে না।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় কায়ান্ট সামান্য পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিম দিকে একই এলাকায় অবস্থান করছে। আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার, কক্‌সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৬০ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের ৫৪ কিলোমিটার কেন্দ্রে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here