গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের ৭ম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের উদ্বোধনঢাকা ।। গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত শ্রমিকনেতা মনজুরুল আহসান খান বলেছেন, সুবিধাবাদ আর আপোসকামীতা ছেড়ে শ্রমিক আন্দোলনকে ফের বিপ্লবী ধারায় নিয়ে যেতে হবে। আজ বাংলাদেশ যে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়িত শক্তির হাতে পড়েছে তার থেকে উদ্ধার করতে পারে একমাত্র শ্রমিক ও মেহনতি মানুষ। তারা মধ্যবিত্ত সচেতন যুবসমাজকে সঙ্গে নিয়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশের আমূল পরিবর্তনের দিকে অগ্রসর না হলে সামনে আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।

শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে গার্মেন্ট শ্রমিকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করে মনজুর এ কথা বলেন।

সংগঠনের সভাপতি মন্টু ঘোষের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সংবিধানপ্রণেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন।

সম্মেলনে পাঠানো বিভিন্ন দেশের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের শুভেচ্ছা বার্তা পড়েন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আন্তর্জাতিক সম্পাদক মনজুর মঈন। উদ্বোধনী সমাবেশ পরিচালনা করেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার।

উদ্বোধনী বক্তব্যে সিপিবির উপদেষ্টা মনজুর বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলন এমনকী বাংলাদেশের অভ্যুদয়েও শ্রমিক শ্রেণির আত্মত্যাগ এবং তাদের আন্দোলন গতি পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান নিয়ামক ছিল। শাসক শ্রেণি এবং সা¤্রাজ্যবাদের চক্রান্তে, ষড়যন্ত্রে, প্রলোভনে সেই আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। মোটা দাগে শ্রমিক আন্দোলনের নামে এখন দুর্নীতি, আপোসকামীতা, শাসকদের পদলেহন ও সুবিধাবাদের চর্চা হচ্ছে।

তিনি গার্মেন্টসে নিষ্পেষিত শ্রমিকদের দাবি দাওয়া আদায়ে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আন্দোলন ও ধারাবাহিক তৎপরতার প্রশংসা করেন। অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলোকেও গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের মত বিপ্লবী ধারায় শ্রমিক আন্দোলন পরিচালনার আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, যে গার্মেন্ট শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতিতে সিংহভাগ অবদান রাখছে, তাদের জীবন সারাক্ষণই থাকে হুমকির মুখে। কাজের চাপ, কর্মস্থলে নিরাপত্তার অভাবের পাশাপাশি জলের দরে তাদের কাছ থেকে শ্রম কিনে নিচ্ছে মালিকরা। শ্রমিকদের শ্রমে-ঘামে উৎপাদিত অর্থ বুর্জোয়া মালিকরা ভোগ-বিলাসে উড়িয়ে দিচ্ছে।

তিনি গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম বেসিক মজুরি ১০ হাজার এবং ন্যূনতম মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা ঘোষণার দাবির প্রতি সমর্থন জানান।

উদ্বোধন শেষে কয়েক হাজার গার্মেন্ট শ্রমিকের একটি মিছিল রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর দুপুর ২টা থেকে সারাদেশের গার্মেন্ট থেকে আসা ৪৭৩জন প্রতিনিধি নিয়ে শুরু হয় সাংগঠনিক অধিবেশন।সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

 

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here