গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে বিএনপিএস-এর সেমিনারঢাকা :: বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উদ্যোগে  ‘সময়ের পরিবর্তনে নারীর ক্ষমতায়নকে বেগবান করায় করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে  এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপিএস-এর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আইনুন নাহার।

সম্প্রতি ড. আইনুন নাহার-এর নেতৃত্বে বিএনপিএস একটি অ্যাকশন রিসার্চ সম্পন্ন করেছে, যেখানে সমাজ-রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তিত পরিস্থিতি নারীর ক্ষমতায়নকে প্রভাবিত করছে কি না, করলে কীভাবে করছে, নারীসমাজ নতুন কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে কি না ইত্যাদি প্রশ্নের জবাব খতিয়ে দেখা হয়েছে । উল্লিখিত গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যেই এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।

সেমিনারে আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় মহিলা সংস্থার নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম নিজামী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার প্রতিনিধি শাহবাগ থানার অফিসার ইন চার্জ আবুল হোসেন ভূঁইয়া, রমনা থানার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল্লাহ আল মারুফ, মতিঝিল থানার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোশতাক আহমেদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফাতেমা আকতার ডলি,  আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর রওশন জাহান পারভীন।

আরও বক্তব্য রাখেন নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা , নারী নির্যাতন প্রতিরোধ এবং ভিকটিমদের যারা সার্পোট দিচ্ছেন এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, নারী, শ্রমিক, শিক্ষা , স্বাস্থ্য, যুব ও মানবাধিকার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।

গবেষক ড. আইনুন নাহার বলেন- গৃহস্থলি কাজের পাশাপাশি বেশির নারীরা দর্জি,গৃহশ্রমিক, রাস্তায় পণ্য বিক্রেতা, স্কুল ও অফিসের কর্মচারী, বিক্রয়কর্মী, নির্মাণ শ্রমিক, পিঠা বিক্রেতা, ছোট খাবারের দোকান, গামেন্টস কর্মী, কৃষিশ্রমিক ইত্যাদি পেশায় যুক্ত থাকলেও বাজারের সঙ্গে তাদের কার্যকর যোগাযোগ তৈরি হয়নি এবং মুনাফার অভাবে উদ্যোক্তা হিসেবে এখনও তৈরি হয়নি যা তাদের নিরুৎসাহিত করে এবং এবিষয়ে সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের  পক্ষ থেকে কার্যকর উদ্যোগ বা নীতিমালা নেই। এছাড়া কৃষক হিসাবে নারীর স্বীকৃতহীনতা এবং উত্তারাধিকারে অসমতা নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বিতার প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। পক্ষপাতদুষ্ট ও টাকার খেলার রাজনৈতিক সংস্কৃতি নারীর ক্ষেত্রে বড় বাধা তাই রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।

রোকেয়া কবীর বলেন-আক্ষরিক অর্থে নারীরা ক্ষমতায়িত হলে নারীর মুক্তি ঘটেনি। নারীরা উত্তারাধিকারে সমাধিকার থেকে বঞ্চনার পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ অন্যান্য মানবিক মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কোনো প্রতিষ্ঠানই নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। নারীর প্রতি সহিংসতা নারীর বিকাশের পথ অবরুদ্ধ করে দিচ্ছে। অন্যদিকে আইন -নীতিমালার কার্যকর বাস্তবায়নের অভাবে নারীর ক্ষমতায়নের পথকে দুর্গম করে তুলছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর রওশন জাহান পারভীন- নির্যাতিত নারীরা আইনের অভাব,আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ও আইনের দীর্ঘসূত্রিতা এবং প্রভাবশালীদের দৌরাত্ম , আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীসহ অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অসততা ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে নারীরা অসহায় বোধ করে যার কারণে  নারীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here