ঢাকা: নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় র‌্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

র‌্যাবের অনেক সদস্যদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ নতুন নয়।অনেক সময় গণমাধ্যমে এ নিয়ে শিরোনামও হয়েছে। অনেক মানবাধিকার কর্মী বলছেন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে বিতর্কিত হয়ে পড়ছে র‌্যাব।

এলিট ফোর্স হিসেবে যে বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১০ বছর আগে সেটি ক্রমান্বয়ে বিতর্কিত হয়ে পড়ছে কেন ?

সম্প্রতি অপহরণ, গুম, চাঁদাবাজি এবং অস্ত্রের মুখে টাকা লুটের ঘটনায় র‌্যাবের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

২০০৪ সালে এলিট ফোর্স হিসেবে যে বাহিনীর যাত্রা শুরু ক্রমেই সেটি বিতর্কিত হয়ে পড়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। ‘ক্রসফায়ার’ নিয়ে র‌্যাবের বর্ণনা এখন অনেকের কাছেই আর বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।

সেই সাথে র‌্যাবকে শুরু থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগ তো আছেই।

দ্রুত অপরাধ মোকাবেলা এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য যে বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়েছিল সেটি ক্রমান্বয়ে বিতর্কিত হয়ে পড়ছে কেন?

মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল মনে করেন র‌্যাবকে ‘আইনের ঊর্ধ্বে’ রাখার কারণেই এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।

সুলতানা কামাল বলেন, “এই বাহিনীটা হচ্ছে না পুলিশ, না আর্মি। এখানে পুরো সেনাবাহিনীর নেতৃত্বই দিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বলা হচ্ছে পুলিশ। শুরু থেকেই এ বাহিনীকে দিয়ে তার দায়িত্বের বাইরে কাজ করানো হয়েছে।”

তিনি মনে করেন রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে দিয়ে একটি খারাপ কাজ করানো হলে তার চেয়ে অনেক খারাপ কাজ তারা নিজেরাই করতে পারে। তখন তাদেরকে জবাবদিহিতায় আনার জন্য সরকারের নৈতিক অধিকার থাকেনা বলে সুলতানা কামাল উল্লেখ করেন ।

তিনি বলেন, “তাদেরকে (র‌্যাবকে) পুরোপুরি আইনের ঊর্ধ্বে রাখা হয়েছে। বেআইনি কাজ করানো হয়েছে। এবং সেটারই ফলাফল এখন আমরা ভোগ করছি।”

অথচ র‌্যাব যখন গঠন করা হয়েছিল তখন চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতায় জনমনে যথেষ্ট আস্থা দিয়েছিল বলে অনেকে মনে করেন।

কিন্তু এই বাহিনীর অনেক সদস্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় এখন উল্টো জনমনে আতংক তৈরি হয়েছে বলে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন।

অনেক সাধারণ মানুষ মনে করেন র‌্যাব সদস্যরা কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লে সেটির প্রতিকার পাওয়া যায় না।

এমন পরিস্থিতির কেন তৈরি হচ্ছে ?

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূরুল হুদা বলছেন র‌্যাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো পূর্ণাঙ্গ এবং সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।

মি: হুদা বলেন, “অভিযোগগুলো গুরুতর। প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিলে এ সন্দেহটা থাকবে না।”

তিনি বলেন দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়া এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত হতে পারে ।

নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ এবং খুন, চট্টগ্রামে দরবারে টাকা লুট, স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল র‌্যাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনাগুলো জনমনে আশংকা এবং উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে যদিও বরাবরই বলা হয় যে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করে কোন র‌্যাব সদস্য দোষী প্রমাণিত হলে তাকে অবশ্যই শাস্তি দেয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত কতজন এই শাস্তি পেয়েছে সেটি কখনো জানা যায়নি ।

সম্প্রতি কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে র্যাব বাহিনী ইমেজ সংকটে পড়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। কিন্তু র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমান মনে করেন র্র‌্যাবের কোনো ইমেজ সংকট নেই ।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, “র‌্যাবে যারা কাজ করে তারা ভিন্ন গ্রহ থেকে আসেনি। তারা এই দেশেরই লোক। তারাও একই তেলে-জলে মানুষ হওয়া। তাদের ভেতরে কেউ কেউ যে অপরাধে জড়িয়ে পড়বে না সেটি নিশ্চিত করে বলা যায় না।”

তিনি বলেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি না সেটাই আসল কথা।

কোনো সদস্যের অপরাধ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে উল্লেখ করেন র‌্যাব মহাপরিচালক। র‌্যাবের কর্মকর্তারা বলছেন এই বাহিনীতে কোনো সদস্য অপরাধে জড়িয়ে পড়লে সেটির দায় পুরো বাহিনীর উপর চাপানো ঠিক হবে না।

যদিও এ কথার সাথে একমত নয় মানবাধিকার কর্মীরা। তারা বলছেন, র‌্যাবের সদস্যদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং সেখানেই মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগ।– বিবিসি।

প্রকাশ :2014-05-06 সময় : 09:02
ঢাকা: নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় র‌্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

র‌্যাবের অনেক সদস্যদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ নতুন নয়।অনেক সময় গণমাধ্যমে এ নিয়ে শিরোনামও হয়েছে। অনেক মানবাধিকার কর্মী বলছেন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে বিতর্কিত হয়ে পড়ছে র‌্যাব।

এলিট ফোর্স হিসেবে যে বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১০ বছর আগে সেটি ক্রমান্বয়ে বিতর্কিত হয়ে পড়ছে কেন ?

সম্প্রতি অপহরণ, গুম, চাঁদাবাজি এবং অস্ত্রের মুখে টাকা লুটের ঘটনায় র‌্যাবের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

২০০৪ সালে এলিট ফোর্স হিসেবে যে বাহিনীর যাত্রা শুরু ক্রমেই সেটি বিতর্কিত হয়ে পড়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। ‘ক্রসফায়ার’ নিয়ে র‌্যাবের বর্ণনা এখন অনেকের কাছেই আর বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।

সেই সাথে র‌্যাবকে শুরু থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগ তো আছেই।

দ্রুত অপরাধ মোকাবেলা এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য যে বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়েছিল সেটি ক্রমান্বয়ে বিতর্কিত হয়ে পড়ছে কেন?

মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল মনে করেন র‌্যাবকে ‘আইনের ঊর্ধ্বে’ রাখার কারণেই এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।

সুলতানা কামাল বলেন, “এই বাহিনীটা হচ্ছে না পুলিশ, না আর্মি। এখানে পুরো সেনাবাহিনীর নেতৃত্বই দিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বলা হচ্ছে পুলিশ। শুরু থেকেই এ বাহিনীকে দিয়ে তার দায়িত্বের বাইরে কাজ করানো হয়েছে।”

তিনি মনে করেন রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে দিয়ে একটি খারাপ কাজ করানো হলে তার চেয়ে অনেক খারাপ কাজ তারা নিজেরাই করতে পারে। তখন তাদেরকে জবাবদিহিতায় আনার জন্য সরকারের নৈতিক অধিকার থাকেনা বলে সুলতানা কামাল উল্লেখ করেন ।

তিনি বলেন, “তাদেরকে (র‌্যাবকে) পুরোপুরি আইনের ঊর্ধ্বে রাখা হয়েছে। বেআইনি কাজ করানো হয়েছে। এবং সেটারই ফলাফল এখন আমরা ভোগ করছি।”

অথচ র‌্যাব যখন গঠন করা হয়েছিল তখন চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতায় জনমনে যথেষ্ট আস্থা দিয়েছিল বলে অনেকে মনে করেন।

কিন্তু এই বাহিনীর অনেক সদস্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় এখন উল্টো জনমনে আতংক তৈরি হয়েছে বলে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন।

অনেক সাধারণ মানুষ মনে করেন র‌্যাব সদস্যরা কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লে সেটির প্রতিকার পাওয়া যায় না।

এমন পরিস্থিতির কেন তৈরি হচ্ছে ?

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূরুল হুদা বলছেন র‌্যাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো পূর্ণাঙ্গ এবং সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।

মি: হুদা বলেন, “অভিযোগগুলো গুরুতর। প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিলে এ সন্দেহটা থাকবে না।”

তিনি বলেন দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়া এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত হতে পারে ।

নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ এবং খুন, চট্টগ্রামে দরবারে টাকা লুট, স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল র‌্যাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনাগুলো জনমনে আশংকা এবং উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে যদিও বরাবরই বলা হয় যে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করে কোন র‌্যাব সদস্য দোষী প্রমাণিত হলে তাকে অবশ্যই শাস্তি দেয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত কতজন এই শাস্তি পেয়েছে সেটি কখনো জানা যায়নি ।

সম্প্রতি কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে র্যাব বাহিনী ইমেজ সংকটে পড়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। কিন্তু র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমান মনে করেন র্র‌্যাবের কোনো ইমেজ সংকট নেই ।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, “র‌্যাবে যারা কাজ করে তারা ভিন্ন গ্রহ থেকে আসেনি। তারা এই দেশেরই লোক। তারাও একই তেলে-জলে মানুষ হওয়া। তাদের ভেতরে কেউ কেউ যে অপরাধে জড়িয়ে পড়বে না সেটি নিশ্চিত করে বলা যায় না।”

তিনি বলেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি না সেটাই আসল কথা।

কোনো সদস্যের অপরাধ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে উল্লেখ করেন র‌্যাব মহাপরিচালক। র‌্যাবের কর্মকর্তারা বলছেন এই বাহিনীতে কোনো সদস্য অপরাধে জড়িয়ে পড়লে সেটির দায় পুরো বাহিনীর উপর চাপানো ঠিক হবে না।

যদিও এ কথার সাথে একমত নয় মানবাধিকার কর্মীরা। তারা বলছেন, র‌্যাবের সদস্যদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং সেখানেই মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগ।- বিবিসি।

– See more at: http://abnews24bd.com/details.php?id=9178#sthash.P6hoK9QX.dpuf

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here