সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অধ্যক্ষসহ ১১ শিক্ষক আর ৫২ ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে আগামী ৬ জানুয়ারী আনুষ্ঠানিকভাবে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হচ্ছে। এদিন দুপুর আড়াইটায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী কার্যালয় কুষ্টিয়া মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ড ট্রেনিং স্কুলের ২ নং গ্যালারি মিলনায়তনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাশ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি ও আবাসনের সু-ব্যবস্থাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। আপাতত কুষ্টিয়া মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ড ট্রেনিং স্কুলের আবাসিকে ছাত্ররা এবং কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন নার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রী নিবাসে থাকবে ছাত্রীরা। এ বছরের ৯ অক্টোবর কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী কার্যালয় কুষ্টিয়া ম্যাটস-এ অধ্যক্ষ হিসেবে ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ দায়িত্বভার গ্রহনের মধ্যদিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ (কুমেক) এবার নর্ববর্ষের প্রথম সপ্তাহে নব-উদ্দ্যোমে প্রথম বর্ষে ৩১ জন ছাত্রী এবং ২১ জন ছাত্র নিয়ে ১ম বর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। ৬ জানুয়ারী উদ্বোধন হয়েই টানা ৮দিন ছুটি শেষে ১৫ জানুয়ারী হতে পুরোপুরি ক্লাশ শুরু হবে। কেমন হবে নতুন মেডিকেল কলেজের শুরুটা। ক্লাশে ছাত্র-ছাত্রীদের মনোনিবেশ কিংবা অধ্যাবসায়। এসব ভাবনা ছাত্র-ছাত্রীদের পেয়ে বসলেও তাঁরা মানসিকভাবে সম্পূর্ণ প্রস্তুত যে কোন প্রতিকুলতাকে জয় করে সামনে এগিয়ে যেতে। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ ইফতেখার মাহমুদ জানিয়েছেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সব কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠ পাঠদান ও রোগীদের উন্নত সেবা দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ হবে শীঘ্রই। ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের জন্য ১৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ১১ জন নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন সহকারী অধ্যাপক ৩ জন এনাটোমি প্রভাষক ৩ জন ফিজিওলজী ১ জন বায়োক্যামিস্ট্রি ও ১ জন কমিউনিটি মেডিসিন নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী চূড়ান্ত নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ফিজিওলজী বিভাগে প্রভাষক আছে কিন্তু সহকারী অধ্যাপক নাই। পর্যায়ক্রমে এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হবে। আপাতত ম্যাটস ও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে কুষ্টিয়া মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট ট্রেনিং স্কুলের নিচতলায় অফিস ও ২নং গ্যালারিতে শ্রেণী কক্ষ করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে এক থেকে তিনটি ইউনিট থাকবে। প্রতিটি ইউনিটে বিষয় ভিত্তিক বিভাগ অনুযায়ী কনসালটেন্ট বা অধ্যাপকের মধ্যে যিনি সিনিয়র তিনি ইউনিট প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। কনসালটেন্টরা ক্লিনিক্যাল শিক্ষক হিসেবে কাজ করবেন। শহরতলীর লাহিনী বটতলায় ২৫ একর জমির ওপর নির্মিত হবে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের ৫শ’ শয্যার হাসপাতাল এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় দু’একের মধ্যেই কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দিবেন। তিনি কলেজের অবকাঠামোর নকশা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে চূড়ান্ত করে স্থাপত্য বিভাগে প্রেরণের পর কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগ একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করবে। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হওয়ায় কুষ্টিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পুরণ তথা এতদ্বাঞ্চলের মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ৫’শ শয্যার কুষ্টিয়া  মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পূর্নাঙ্গতা পেলে এ অঞ্চলের মানুষকে সূচিকিৎসার জন্য ঢাকা কিংবা দেশের বাইরে যেতে হবেনা। অল্প খরচে কুষ্টিয়াতেই খুব ভাল চিকিৎসা সেবা পাবে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কাঞ্চন কুমার/কুষ্টিয়া /

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here