কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে পানির দরেপ্রতিনিধি ঝিনাইদহ:: ঝিনাইদহে কাঁঠালে কদর নেই, বিক্রি হচ্ছে পানির দরে এমনই মনে করছেন জেলার কাঠালচাষীরা। ঝিনাইদহের সবচেয়ে বড় কাঁঠালের হাট মহেশপুরের খালিশপুরে কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে একেবারে পানির দরে। বাজারে এত পরিমাণ কাঁঠাল আমদানি হচ্ছে ফলে ক্রেতার অভাব দেখা দিয়েছে।

বড় সাইজের (১০ কেজির উপরে) বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। আর মাঝারি সাইজের কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫-২০টাকায়। অনেক কৃষক তাদের কাঁঠালের দাম না পাওয়ায় ছাগল গরুকে খাওয়াচ্ছেন।

জাতীয় ফল কাঁঠাল আকারে বড় পুষ্টিগুণও অনেক বেশি। কাঁঠালের কোনো অংশই অপ্রযোজনীয় নয়। পাকা কাঁঠালের কোশ সুস্বাদু খাবার, বাকল গবাদি পশুর খাদ্য, বীজ ও কাঁচা কাঁঠাল তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়। ঝিনাইদহ অঞ্চলের মাঠি কাঠাল চাষের জন্য উপযোগী। কোনো না কোনো বাড়ির আঙিনায় ২/৩টি কাঠাল গাছ আছেই। অনেকে আবার বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করছেন। কাঠাল গাছে তেমন পরিচর্যা করতে হয় না।

ঝিনাইদহে এবার কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার মহেশপুর উপজেলা খালিশপুর বাজারে সপ্তাহে ২দিন কাঠালের হাট বসে। শুক্রবার ও সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে কাঠালের কেনাবেচা। এবার প্রতি হাটে এখান থেকে প্রায় ১০০ ট্রাক কাঠাল বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম একেবারের কম।

খালিশপুর কাঠালের হাটে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশ স্যালোইঞ্চিন চালিত নসিমস, ভ্যান করে কাঠাল আনা হয়েছে। কিন্তু দুপুর ১১টা পর্যন্ত বাজারে কোনো ক্রেতা/কাঠাল ব্যবসায়ীকে দেখা যায়নি। কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের দু’ধারে দাড়িয়ে আছে কৃষকরা কাঠাল বিক্রির অপেক্ষায়।

স্থানীয় কাঠাল ব্যবসায়ী আমির হোসেন জানান, জেলার সবচেয়ে বড় কাঁঠালের হাট খালিশপুর বাজার। এখানে কালীগঞ্জ, কোটচাদপুর, মহেশপুর, জীবননগর, চৌগাছা এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা কাঁঠাল বিক্রি করতে নিয়ে আসে। সপ্তাহে ২দিন এখানে কেনাবেচা হয়। ঢাকা,বরিশাল, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারীরা এখান থেকে কাঠাল কিনে নিয়ে যায়।

কাঠাল চাষী বজরাপুর গ্রামের জয়নাল হোসেন জানান, তার প্রায় ২৯টি কাঠাল গাছ রয়েছে। এবার কাঠালের বাম্পার ফল হয়েছে। এক একটি গাছে ৫০-৬০টি কাঠাল ধরেছে। তার ২৯টি কাঠাল গাছে প্রায় ১ হাজার ৫শ কাঠাল ধরেছে। তিনি জানান, গত বছর বড় সাইজের কাঠাল বিক্রি করেছিলাম ৫০-৬০ টাকায়। আর এবার বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ৩০/৩৫ টাকায়। তাও আবার ক্রেতার অভাব।

বেশ কয়েকজন কাঁঠাল ব্যবসায়ী ও কৃষক জানান, যদি এলাকায় কাঠাল সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা থাকতো তাহলে সারা বছর এখান থেকে কাঠাল সরবরাহ করা যেতো।

কালীগঞ্জ কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, জেলার অধিকাংশ বাড়িতে, বাড়ির আঙিনায়, পতিত জমিতে কাঠাল গাছ দেখা যায়। এছাড়াও অনেক কৃষক বাণিজ্যিক ভাবে কাঠালের চাষ করছেন। কাঠাল গাছ তেমন একটা পানি সহ্য করতে পারে না। এ অঞ্চলের স্থলভাব অপেক্ষাকৃত উচু হওয়ায় স্থানীয় কোনো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় না। যার কারণে ঝিনাইদহ জেলার সব উপজেলায়ই প্রচুর পরিমাণের কাঠাল উৎপাদন হয়।

তিনি আরো জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে কাঁঠালের বাজারে প্রচুর পরিমাণের কাঁঠাল এসেছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here