এসডিজি বাস্তবায়নে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় অংশগ্রহণ ও সর্বজনীন বাজেট বরাদ্দ দাবি

স্টাফ রিপোর্টার :: দারিদ্র বিমোচন, ধরিত্রী সংরক্ষণ এবং সকলের জন্য সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৭টি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) ও ১৬৯টি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক গৃহীত নানা কর্মপরিকল্পনা, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী জাতীয় নানা কৌশলপত্র প্রণয়নে জনঅংশ্রহণ এবং এগুলো সঠিক বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত ও ন্যায্য বাজেট বরাদ্দ সূচারুভাবে সম্পন্ন হওয়া খুবই জরুরি।

গত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ভোলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে জনপ্রতি পানি, স্যানিটেশন বরাদ্দ ছিল মাত্র টাকা ৫১ টাকা, যা চাহিদার (৪৮৩ টাকা) বিপরীতে ৯ ভাগের ১ ভাগ। ২০১৮-১৯ স্থানীয় পর্যায়ে বিশেষ করে দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী জনগণের জন্য বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিনের জন্য আরও বরাদ্দের জোর দাবি সমাজের নানা মহল থেকে জানানো হচ্ছে।

বেসরকারী সংস্থা ডর্‌প বাস্তবায়িত ‘ওয়াটারশেড নাগরিক ক্ষমতায়ন’ প্রকল্পের পজিশন পেপারে এ তথ্য তুলে ধরে উল্লেখিত দাবী করা হয়। নেদারল্যান্ডস সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা সিমাভীর সহযোগিতায় বেসরকারী সংস্থা ডর্‌প ভোলা জেলার সদর উপজেলায় পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ‘ওয়াটারসেড’ প্রকল্পটি পাইলট আকারে বাস্তবায়ন করছে।

পুচচিট

সংস্থাটির পক্ষ থেকে পজিশন পেপারে আরো জানানো হয়, দেশের একমাত্র ব-দ্বীপ ভোলা। ভোলা সদর উপজেলায় ১৯টি সংরক্ষিত পুকুর এবং ৩১টি খাল রয়েছে। যার মধ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই) সম্প্রতি ৭টি পুকুর খনন করার কার্যক্রম শুরু করেছে। এছাড়া খালগুলোর মধ্যে অধিকাংশই ভরাট হয়ে মাঝেমধ্যে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে এবং বিভিন্ন গৃহস্থালী ও ব্যবসায়িক কারণে দূষিত হচ্ছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো ‘ভোলা খাল’, যা এই উপজেলার প্রাণ ভোলা খাল।

প্রাপ্ত তথ্যে আরো জানাযায়, এছাড়া পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০১১ এর তথ্যমতে, ভোলায় বাসকৃত ৯৭ ভাগ পরিবার টিউবওয়েলের পানি পান করে। ৬৪.৬ ভাগ পরিবারের লোকজন স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করলেও ৩১.৬ ভাগ পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে এবং ৩.৮ ভাগ পরিবারের কোন টয়লেটের সুবিধাই নেই।

ভোলা নাগরিক কমিটির সভাপতি এমএ তাহের বলেন, ডর্‌প’র এ প্রকল্পটি একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ। স্থানীয়দের অধিকার বাস্তবায়ন ও সরকারে কার্যক্রম বাস্তবায়নে জন সম্পৃক্ততা বাড়াতে আমরা একত্রিত হয়ে কাজ করছি। ভোলার পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য এ প্রকল্পটি একটি উদহারণ তৈরি করছে। এ প্রকল্প শেষ হওয়ার পরেও বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে টেকসই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চলমান থাকবে আশা করছি।

ডর্‌প’র গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান জানান, সমাজের সকলের অংশগ্রহণকে প্রাধান্য দিয়ে বাংলাদেশ আজ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহ বাস্তবায়নে প্রচুর সম্পদ প্রয়োজন তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সে লক্ষ্যে সুশীল সমাজের অংশগ্রহন বৃদ্ধি করতে ‘ওয়াটারসেড’ কার্যক্রম ভূমিকা রাখছে। পানি, স্যানিটেশন ও সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয় ন্যায্যতাভিত্তিক স্থানীয় বাজেট বরাদ্দকে বিশেষভাবে নজরে আনতে হবে। পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক এসডিজি বাস্তবায়নে জনপ্রতি অতিরিক্ত কাঙ্খিত বরাদ্দ ১১৯৪ টাকা সংকুলান এখন থেকেই শুরু করতে হবে। তাহলেই আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারবো।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here