কর্মসংস্থানের কর্মসূচিস্টাফ রিপোর্টার :: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে ২০২১ সালের মধ্যে দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল ২২টি মন্ত্রণালয় ও ৩৫ টি অধিদপ্তরভুক্ত সংস্থার আওতাধীন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এক কোটি কর্মীর প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিবে সরকার।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বাসসকে জানান, দেশে বর্তমানে ২৬ লাখ বেকারের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তাদের দক্ষতা উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি ও তাদের কর্মসংস্থান করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দেশের মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ নানা খাতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো প্রয়োজন। বিশেষ করে গবেষণা কাজে পারদর্শী ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল(এনএসডিসি) পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, সরকার দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলির মান সম্পন্ন প্রশিক্ষণের জন্য এই প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

সরকার রূপকল্প ২০২১-এর আওতায় বৈদেশিক বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা ৫৪০ কোটি ডলার নির্ধারণ করেছে। এতে দেশে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে ৪০ বিলিয়ন ডলার এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে প্রায় ১ কোটি মানুষের।

দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট’ (সিপ) শীর্ষক এ প্রকল্পের পাঁচটি খাতে ১২টি ট্রেডে বছরে ১০ হাজার ২০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিবে। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে ৪৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়।

বর্তমান সরকার এসডিজি বাস্তবায়নে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি দূর করে উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছে। বিদুৎ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার সকল উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়।

২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বিনিয়োগ বোর্ডে নিবন্ধিত প্রকল্পসমূহে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৫৩ জন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি কর অবকাশসহ বিভিন্ন প্রণোদনার সৃষ্টি করায় বৈদেশিক বিনিয়োগ ক্রমেই বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে।

মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত দেশে বৈদিশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১ দশমিক ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হওয়ায় বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থাশীল করছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আহরণ, উন্নয়ন ব্যয় বাস্তবায়ন ও বেসরকারি কিংবা বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে বিগত দশ বছরে মোট বিনিয়োগ বেড়ে তা জিডিপির ২৮ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশি বিনিয়োগ প্রাপ্তিতে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ দ্বিতীয়।

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন করেছেন। বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে ভারত, চীন, জাপান ও কোরিয়ার জন্য পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল সংরক্ষণসহ ৩০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর ফলে দেশে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে ৪০ বিলিয়ন ডলার এবং প্রায় ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here