স্টাফ রিপোর্টার :: নির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে রপ্তানি বহুমুখীকরণের জন্য চাহিদা দেখে নতুন পণ্য উৎপাদন এবং নতুন বাজার সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় এসএমই মেলা ২০১৮’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকার প্রধানের এ আহ্বান আসে।
তার লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিভিন্ন দেশের পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তির আত্মীকরণ এবং পণ্যের মানোন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি।
“বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পণ্যের বাজার অনুসন্ধান এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী সে সব পণ্য উৎপাদন করতে হবে। মুষ্টিমেয় কয়েকটি পণ্যের ওপর রপ্তানি নির্ভরশীলতা কমিয়ে আমাদের এখন রপ্তানি বহুমুখীকরণের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।”
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ঠাণ্ডা লেগে’ প্রধানমন্ত্রীর গলা বসে গেছে। এ কারণে অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকা প্রধানমন্ত্রীর লিখিত বক্তব্যের অংশবিশেষ পড়ে শোনান।
প্রধানমন্ত্রীর লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশের সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার জাতীয় শিল্পনীতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে শিল্প উন্নয়নের অন্যতম মাধ্যম হিসাবে গণ্য করছে। সরকারের নেওয়া কর্মসূচির ফলে দেশব্যাপী টেকসই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের দ্রুত প্রসার ঘটছে।
বাংলাদেশে কুটির শিল্পের সুদীর্ঘ গৌরবের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যবাহী জামদানি, নকশিকাঁথা এবং সিলেটের শীতল পাটি ইতোমধ্যে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য-তালিকায় স্থান পেয়েছে। উদ্যোক্তাগণ এ সকল পণ্যের ব্র্যান্ডিং এর পাশাপাশি বাজার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিতে পারেন।”
এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেয়সহ বিভিন্ন প্রণোদনা এবং দেশে শিল্প বিকাশে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচির কথাও তার বক্তব্যে তুলে ধরা হয়।
সেখানে বলা হয়, দেশের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের বিকাশে জেলায় এবং উপজেলায় এসএমই পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এ পরামর্শ কেন্দ্রগুলো এসএমই শিল্প প্রসারে ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার হিসাবে কাজ করবে।
“উদ্যোক্তাগণ ব্যবসা স্থাপন থেকে শুরু করে ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যবসায়িক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ও সহায়তা, পরামর্শক সেবা ইত্যাদি এই ওয়ানস্টপ সেন্টার থেকে গ্রহণ করতে পারবে। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।”
এসএমইর বিকাশের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “দেশে প্রায় ১০ লাখ এসএমই প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিবছর শুধুমাত্র এসএমই খাতেই কমপক্ষে ১০ লাখ বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।”
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে এগিয়ে যাবে, নারী উদ্যোক্তার সৃষ্টি হবে- সেটাই সরকারের প্রত্যাশা বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
পাঁচ দিনব্যাপী ষষ্ঠ জাতীয় এসএমই মেলায় সারাদেশ থেকে আসা ২৬৭টি এসএমই প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করবে। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশই নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠান।
অন্যদের মধ্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, এফবিসিসিআিইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কেএম হাবিব উল্লাহ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।