ঢাকা : আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে সর্বত্র জোটের একক প্রার্থী দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, এটি স্থানীয় নির্বাচন। স্থানীয় নেতাদের সাথে আলোচনা করেই যথাসম্ভব একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার রাতে ১৯ দলের নেতাদের সাথে বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে খালেদা জিয়া এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ওই বৈঠকে জোটের একজন মুখপাত্র নিয়োগের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
জানা গেছে, দলের চেয়ারপারসনের নির্দেশনায় বিএনপির একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। মূলত বিভাগওয়ারি দলের কেন্দ্রীয় নেতারাই উপজেলা নির্বাচন পরিস্থিতি দেখভাল করবেন। প্রার্থিতা নিয়ে কোনো জটিলতা তৈরি হলে তারা স্থানীয়পর্যায়ে ১৯ দলীয় জোটের নেতাদের সাথে আলোচনা করে তা নিরসন করবেন।
জানা গেছে, জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হিসাবে নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোট। দলটির নীতিনির্ধারকদের মতে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আত্মগোপনে থাকা ও মামলা-হামলাসহ নানাভাবে নির্যাতিত নেতাকর্মীরা সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাবেন। বর্তমান সরকারের প্রতি যে জনগণের সমর্থন নেই, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়েও সেটা প্রমাণ করানো যাবে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন অরাজনৈতিক হওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় সিদ্ধান্ত জানাচ্ছে না বিএনপি। তবে প্রকাশ্যে ঘোষণা ছাড়া যা যা করা প্রয়োজন তার সবই শুরু করেছে বিএনপির হাইকমান্ড। নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণ, প্রার্থী বাছাইসহ বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করে তৃণমূলে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণ হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকে। আমরা সেটা অব্যাহত রাখতে চাই। এ ছাড়া স্থানীয় নেতাকর্মীদেরও নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগ্রহ রয়েছে। তবে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন কতটা সুষ্ঠু নির্বাচন তারা করতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে স্থানীয় জনগণ এই সরকারের প্রতি অনাস্থা জানাবে বলে মনে করেন তিনি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বিতর্কিত ও নিষ্ক্রিয়দের বাদ দিয়ে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে প্রার্থী করার কেন্দ্রের নির্দেশ স্থানীয় নেতাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না সে দিকে দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে যারা সক্রিয় ছিলেন না, তাদের ওপর খুবই নাখোশ খালেদা জিয়া। তাই দলে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে যোগ্য নেতাকে যোগ্য জায়গায় নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে চান তিনি। এ জন্য প্রথমেই দলের জাতীয় কাউন্সিল করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। কাউন্সিলের পর ঢেলে সাজানো হবে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি।
বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনের বেশির ভাগ জায়গায় জয়ী হয়ে দলের জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিতে চায় দলটি। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেয়ে ইতোমধ্যে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছেন তৃণমূল নেতারা। দফায় দফায় দলীয়, জোট ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সাথে বৈঠক করছেন উপজেলা বিএনপি নেতারা। প্রার্থী বাছাইয়ে এরই মধ্যে সবার মতামত নেয়া হচ্ছে। গঠন করা হচ্ছে নির্বাচনী মনিটরিং কমিটি। স্থানীয় নেতাকর্মীরাও এই নির্বাচনকে গুরুত্বসহকারে যা যা করণীয় তা শুরু করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here