ষ্টাফ রিপোর্টার :: মুক্তিযোদ্ধা ভাতা গ্রহণের ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার হিসেবে স্বামী/স্ত্রী/সন্তান/পিতা-মাতার অবর্তমানে মুক্তিযোদ্ধার ভাইবোনকে ভাতা গ্রহণের অধিকার দিয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০১৮ বিল সংসদে উত্থাপিত হয়েছে।
এছাড়া নতুন আইনে প্রতিরক্ষা বাহিনী, পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত ও নিয়মিত আয়ের উৎস থাকা মুক্তিযোদ্ধাদেরও সম্মানী ভাতা পাওয়ার অধিকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশনে সোমবার বিলটি উত্থাপন করেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।বিলে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সুবিধাভোগী কারা হবেন তা স্পষ্ট করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ট্রাস্টের মালিকানাধীন স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির উন্নয়ন রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সম্মানী ভাতা, উৎসব ভাতা বা অন্য কোনো ভাতা বা সম্মানী প্রদান করবে। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীকে ভাইস চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রী মনোনীত চারজন মুক্তিযোদ্ধা এমপি বা উত্তরাধিকারী, অর্থ সচিব, শিল্প সচিব, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ও ট্রাস্টের এমডিকে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হবে।
বিলে এ বোর্ডের পূর্বানুমোদন ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের কোনো স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়, হস্তান্তর ও দীর্ঘমেয়াদি ইজারা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার রহিত করা হয়েছে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ১৯৭২ সালে জারি করা দ্য বাংলাদেশ (ফ্রিডম ফাইটারস) ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অর্ডার রহিতক্রমে পরিমার্জন ও যুগোপযোগী করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রণীত হয়।
আগের আইনে প্রতিরক্ষা বাহিনী, পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সদস্য বা সরকারি পেনশনভোগী বা যাদের নিয়মিত আয়ের উৎস আছে, তারা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় তাদের সম্মানীভাতা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছিল না।
নতুন আইনে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত থাকার কারণে বিল উত্থাপনে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নেয়া হয়েছে।
এছাড়া সোমবার বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট বিল-২০১৮, পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলী) বিল- ২০১৮, কৃষি বিপণন বিল-২০১৮, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন বিল-২০১৮ উত্থাপিত হয়।চারটি বিলের রিপোর্ট : সংসদে সোমবার চারটি বিলের রিপোর্ট উপস্থাপিত হয়। সেগুলো হল- বস্ত্র বিল-২০১৮, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০১৮, যৌতুক নিরোধ বিল-২০১৮, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০১৮।