ঢাকা: ঈদের সব আনন্দ কাটাতে চাই আমার মায়ের সঙ্গে। আর বন্ধুদেরও সময় দিতে চাই। ঈদের দিন মায়ের কাছে থাকাটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় আনন্দের। তাই প্রতিবারের মতো ঈদে নিজ বাড়ি সিরাজগঞ্জেই থাকব। সেখানেই থাকবো, ঘুরবো। মায়ের হাতের রান্না খেতে আমি খুব ভালবাসি। এবারও সেই সুস্বাদু খাবারের অপেক্ষায় আছি।
তিশা
ছোটবেলায় ঈদের সময় অনেক ঘুরতাম। কিন্তু এখন আর সেভাবে ঘোরা হয় না। আসলে পারি না। আমার কাজের চাপ তো আছেই, ফারুকীরও একই অবস্থা। একসঙ্গে দুজনের অবসর খুব কমই মেলে। বিয়ের আগে একভাবে ঈদ করতাম, এখন অন্যভাবে করি। আগে ছিলাম মায়ের মেয়ে, এখন বাড়ির বউ। দায়িত্বও তাই একটু বেশি। এবারের ঈদটা ঢাকাতেই করব। ঈদের দিন শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যাব। আম্মার সঙ্গেও দেখা করব। আড্ডা হবে, খাওয়া-দাওয়া হবে। তবে ঈদের পরপরই আবার শুটিং শুরু হয়ে যাবে। তাই অবসর খুব বেশি মিলছে না।
আনিসুর রহমান মিলন
আমার ঈদ ঢাকাতেই বেশি কাটে। আসলে ছোটবেলায় ঈদের দিনগুলো উপভোগ করতাম। আমাদের বাড়িতে অতিথিদের উপস্থিতি থাকত অনেক। কাজিনদের নিয়ে পুরো সকালটা হৈ-হুল্লোড় করে কাটাতাম। বিকালের দিকে সবাই একসঙ্গে চিড়িয়াখানা, শিশুপার্কে ঘুরতে যেতাম। আইসক্রিম, ফুচকা, চটপটি খেতাম। সন্ধ্যার আগে আগেই বাসায় ফিরে আসতাম। সে এক অন্যরকম ঈদ ছিল। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঈদ পালনটা স্বাভাবিকভাবেই বদলেছে। আগের মতো আর আনন্দ হয় না। আমি এবারের ঈদটাও ঢাকায় করছি। ঈদের দিন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেবো, আত্মীয়স্বজনের বাসায় যাবো। আর মজা করে খাবো।
অপূর্ব
আমি ঈদে ঢাকাতেই থাকি। ঈদে বন্ধুদের নিয়ে ঘোরার বেশ কিছু মজার স্মৃতি আছে। আগে তো পড়াশোনার চাপে সচরাচর কোথায় ঘুরতে যাওয়া হতো না। ঈদ এলে সেই সুযোগটা পেতাম। ঈদের সময়টা আমার জন্য একেবারে আলাদা। সারাদিন শুধু ঘুরে বেড়াতাম। ঢাকার অলিগলি চষে বেড়াতাম। বাবার কাছ থেকে কিছু পকেট মানি নিয়ে নিতাম। সেলামির টাকা তো থাকতোই। ঘুরতে ঘুরতে সেই টাকায় পছন্দের খাবার কিনতাম। তবে ঢাকার বাইরে ঘুরতে যাওয়া হতো না। এবারের ঈদটাও ঢাকায় করব। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে হয়তো যাবো। তবে কদিন আগেই যেহেতু আমি বাবা হয়েছি, তাই এবারের ঈদের অনুভূতিটা অনেক বেশি অন্যরকম আমার জন্য।
জাকিয়া বারী মম
ছোটবেলায় প্রতি ঈদেই নানাবাড়ি বেড়াতে যেতাম। কাজিনদের সঙ্গে ড্রেস নিয়ে প্রতিযোগিতা চলত। জামা-কাপড়ের তুলনায় ঈদের জুতার ব্যাপারে আমার একটু বেশি আগ্রহ ছিল। অন্যগুলো আর যা-ই হোক, যেনতেন জুতা আমি কখনোই নিতাম না। পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে জুতা কিনতাম। কেউ জুতায় হাত দিলে রঙ নষ্ট হওয়ার ভয়ে আমি নতুন জুতা নিয়েই রাতে ঘুমাতাম। নানাবাড়িতে বেড়াতে গেলে অনেক মজা হতো। এবারের ঈদটা ঢাকায় করব। ঈদের পরদিন থেকেই আবার কাজ। ইচ্ছে থাকলেও তাই কোথাও যাওয়া হচ্ছে না।
বন্যা মির্জা
ঈদের আনন্দগুলো আসলে বদলে গেছে। ঈদটা এখন আর কোন ছোট মানুষের কাছেও খুব একটা আনন্দের ব্যাপার নেই। আমরা একটা নতুন জামা পেলেও খুব খুশি হতাম। এই বিষয়গুলোও এখন বদলে গেছে। ওই একটা নতুন জামা পরার যে আনন্দ, সেটা এখন আর কারও জীবনেই কি আছে? ঈদের আনন্দ বরং আগের থেকে এখন কমে গেছে। এটা শুধু ঢাকায়ই নয়, মফঃস্বলেও। আসলে একটা অভাববোধ আছে। সেটা টাকার নয়, কিছু একটা না থাকার অভাববোধ। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি কলকাতায় থাকেন। এবারই প্রথমবারের মতো উনারা ঈদ করছেন আমার সঙ্গে, বাংলাদেশে। উনাদের নিয়ে বাবা-মা ও ভাইবোনদের নিয়েই ঈদটা কাটাব। আমার বর আপাতত দেশে নেই। সব মিলিয়ে এবারের ঈদটা একদিক থেকে আমার জন্য মধুর, আরেকদিক থেকে বিষাদময়। ঈদে বর কাছে থাকবে না, সবকিছু ভাল লাগলেও এটা আমার ভাল লাগবে না।
তাহসান
এবারের ঈদটা বেশ স্মরণীয় আমার জন্য। গানের মানুষ আমি। চার বছর পর আমার অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে এই ঈদে। এটা একটা বিশেষ ব্যাপার। আমরা যারা গান করি, তারা যে কত প্রতিকূলতার মাঝে গান করি এটা আসলে আমরাই বুঝি। চারটা নাটকেও অভিনয় করছি ঈদের জন্য। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কারণে এই ঈদটা একটু আলাদা। আমার মেয়ে। মেয়ের জন্য জামা কেনা, অন্যরকম একটা অনুভূতি। আগে বাবা-মাকে আবদার করতাম। এখন মেয়ের জন্যই বেশি চিন্তা করছি। মেয়ে তো এখনই আবদার করতে পারছে না। অপেক্ষা করছি- কবে মেয়ে বড় হবে, কবে তার আবদার শুনব! আগের ঈদ আর এখনকার ঈদের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আগে সালামি পেতাম, অথচ এখন দিতে হয়। সালামির ক্ষেত্রে আমার কথা একটাই, পা ছুঁয়ে সালাম করতে হবে। ছোটবেলায় তো আমরা এভাবেই সালামি নিতাম! ঈদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে জাকাত দেয়া। আমি তা-ই মনে করি। এই জাকাতটা সবারই ঠিকমতো দেয়া উচিত, যাতে করে ঈদের আনন্দটা সবার সঙ্গে ভাগ করতে পারি। আমি নিজেকে খুব বেশি ধার্মিক লোক বলব না, কিন্তু জাকাতের ব্যাপারটাকে সবসময়ই খুব গুরুত্ব দেই।
সজল
এবারের ঈদ কাটাব ঢাকায়। চাঁদরাত পর্যন্ত নাটকের শুটিং থাকবে, তাই ঈদের দিনটিও কাটাতে হবে ক্লান্তি নিয়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে নতুন পাঞ্জাবি পরে নামাজে যাবো। ওখান থেকে ফিরে দুই ঘণ্টা ঘুমাব। বিকালে উঠে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় যোগ দেবো। ওই আড্ডা শেষ হবে গভীর রাতে। বাসায় ফিরে টিভির সামনে বসব ঈদ অনুষ্ঠান দেখার জন্য।
বিন্দু
আমি ঈদ করবো ঢাকায়। সারা বছর নাটক নিয়ে ব্যস্ত থাকায় রান্নাঘরে ঢোকা হয় না একদমই। তাই ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই রান্না করবো। গরুর গোশত দিয়ে আমি খুব ভাল শাহী টুকরা বানাতে পারি। এবারের ঈদে সেটা বানিয়েই সবাইকে আপ্যায়ন করব। মিডিয়ার বাইরে আমার দু-তিনজন ভাল বন্ধু আছে। তারা আমার বাসায় বেড়াতে আসবে। আমি নিজে ঈদের দিন বাইরে কোথাও বের হবো না। তবে ঈদের পরদিন বাইরে ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা আছে।
হাবিব ওয়াহিদ
ঈদে ঢাকাতেই থাকছি। পরিবারের সঙ্গেই ঈদটা কাটাবো। বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের বাসায়ও যেতে পারি। আসলে যখন যা মন চায় ঈদের দিন সেটাই করবো।
কণা
ঢাকাতেই ঈদ করবো। তবে বিকালের দিকে দাদার বাড়ি গাজীপুরে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। ঈদ মানেই অবসর। ব্যস্ততার মাঝে যেটুকু অবসর সময় কাটাতে পারি, তার পুরোটুকুই আমার ভাল লাগার মুহূর্তের মধ্যে পড়ে। ঈদের এটাই সবচেয়ে বড় আনন্দ।
বাঁধন
আমি ঢাকায় ঈদ করবো। শুটিংয়ের কারণে পরিবারকে ঠিকমতো সময় দিতে পারি না। এ বিষয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে অনুযোগের শেষ নেই। তাই ঈদের সময়টুকু পরিবারের সঙ্গে থেকে তার দায় কিছুটা কমাতে চাই। আগে ঈদ ছিল নিজের আনন্দের জন্য। সেই আনন্দ এখন মহাদায়িত্বে পরিণত হয়েছে। এই দায়িত্বের জায়গা থেকেই আমি আমার পরিবারের সঙ্গে ঈদের সময়টুকু কাটাতে চাই। ঈদের দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমি আমার মেয়ের সঙ্গে থাকতে পারব, এটাই আমার ঈদ আনন্দ। তবে ঈদে রান্নার কিছু ঝামেলা থাকে সেটাও করতে হবে। তবুও তো আমার মেয়েটা আমার কাছে থাকবে।
মাহিয়া মাহি
এরই মধ্যে ঈদ করতে রাজশাহী চলে এসেছি। হাতে অনেক কাজ থাকলেও গ্রামে আসার সুযোগটা মিস করতে চাইনি। ছুটি মিলেছে সব মিলিয়ে চার দিন। এই সময়টা পরিবারের সবার সঙ্গে কাটাবো। পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটানোর মজাই আলাদা।
মিথিলা
শৈশব থেকেই ঈদ ঢাকায় করি। তখন আমার একটা অভ্যাস ছিল, ঈদের সকালে সেমাই খেয়েই দৌড় দিতাম দাদির বাড়ি। সেখানে একটু সেমাই খেয়েই আবার ছুটতাম ফুফুর বাড়ি। ঈদে আর কোথায় যাওয়া হোক বা না হোক এই দুই বাড়িতে আমার যাওয়া চাই-ই চাই। তখন স্কুল ছুটি থাকত বলে পড়াশোনার বালাই ছিল না। তাই ফুফুর বাড়িতেই কয়েক দিন থেকে যেতাম। ফুফাতো ভাইবোনদের সঙ্গে গল্প করতাম। সকালে ফুফুর কাছে বের হওয়ার জন্য বায়না ধরতাম। ফুফুও আর না করতেন না। আমাদের নিয়ে শিশুপার্কে ঘুরে বেড়াতেন ফুফু। খুব মজা করতাম। চার দেয়ালের বন্দি জীবনের পর একটু ঘুরতে কার না ভাল লাগে! এবারও ঈদে ফুফুর বাসায় যাব। এখন আর ছোটবেলার মতো ঘুরতে না পারলেও মজা কম হবে না।
মৌসুমী হামিদ
ঈদের দিনটা আমার কাছে অন্য রকম। ছোটবেলায় এই দিনটির জন্য মুখিয়ে থাকতাম। নতুন জামা পরে পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে বের হতাম। আত্মীয়স্বজনের বাসায় বেড়াতে যেতাম। আমাদের বাড়িটাও আত্মীয়স্বজনে গিজগিজ করত। সমবয়সী কাউকে পেলেই তার সঙ্গে খেলতাম। প্রতিবারের মতো এবারের ঈদটাও গ্রামের বাড়ি খুলনাতে করছি। সারা বছর যেখানেই থাকি না কেন, ঈদে আমাকে খুলনায় যেতে হবেই। একবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। শুটিং থাকলে তা বাতিল করে হলেও খুলনায় যাই। এবার গ্রামে গেলে বেশ কিছু জায়গায় ঘোরার পরিকল্পনা আছে। আমার বয়সী অনেক বন্ধু আছে সেখানে। ওরা আমার পথ চেয়ে থাকে। ঈদ ছাড়া তো আর সচরাচর গ্রামে যাওয়া হয় না।
নুসরাত ফারিয়া
জন্মের পর থেকে প্রতি ঈদই আমার ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে কাটে। দাদা-দাদি, চাচা-চাচিসহ প্রায় ৩০ সদস্যকে নিয়ে আমাদের ঈদ। ঈদে তেমন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না। তবে বাসায় কাজিনদের সঙ্গে অনেক আড্ডা হয়, মজা হয়। আয়োজন করে পরিবারের সবাই মিলে টিভিতে ঈদ অনুষ্ঠান দেখি। এবার ঈদে বেশ কয়েকটি লাইভ অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবো। তাই সারাক্ষণ হয়তো কাজিনদের সঙ্গে থাকতে পারব না। তবে বাসার সবাই লাইভ অনুষ্ঠানে আমার উপস্থাপনা দেখবে। সঙ্গে থাকবে নানা পদের সুস্বাদু খাবার।
নিরব
প্রতিবারের মতো এবারও পরিবারের সঙ্গে ঢাকাতেই ঈদ করবো। ঈদে ঢাকার বাইরে খুব কমই যাওয়া হয়। ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় ঈদ করি আমার পরিবারের সঙ্গে। ঈদে সবচেয়ে মজার মুহূর্ত হলো বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে মিলে ঈদের নামাজ পড়া। এটাই আমার কাছে ঈদের সবচেয়ে বেশি আনন্দের বিষয়। আর ঘোরাঘুরি, খাওয়া দাওয়া, টিভি অনুষ্ঠান দেখাতো রয়েছেই।
মেহজাবিন
ঢাকাতেই ঈদ করবো। বন্ধুদের সঙ্গে বিকালে বেড়াতে যাবো। আমার ঈদ আনন্দ ঢাকার ফাঁকা রাস্তা। বন্ধুবান্ধব নিয়ে লংড্রাইভে বের হবো। অবসর বা ছুটিতে লংড্রাইভে যাওয়ার ইচ্ছে সব সময় জাগে মনে। কিন্তু ঢাকার যে জ্যাম তাতে এই ইচ্ছেটা মনের মধ্যে সুপ্ত বাসনা হিসেবেই রেখে দিতে হয়। ঈদের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করার সুযোগ পাওয়া যায়।
স্বাগতা
আমার কাছে ঈদ মানেই শান্তির ঘুম। পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারি অনেকটা সময়, এটা ঈদের আনন্দের মধ্যে অন্যতম। ঈদে ভাল লাগার মুহূর্ত বলতে পারব না, তবে একটা তৃপ্তি অনুভব করি যখন মনে হয় আমাকে কেউ শটের জন্য ডাকে না। অর্থাৎ শুটিংয়ের জন্য আমার কোন পিছুটান থাকে না।
নওশাবা
আগের বারের মতোই এবারও ঢাকায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ করব। ঈদের রুটিনের সবটুকু সময়জুড়ে থাকবে আমার মেয়ে আর রান্নাবান্না। ঈদের প্রতিটি মুহূর্ত আমার ভাল লাগে নিজের মতো করে সময় কাটাতে পারি বলে।
কোনাল
আমার ঈদের আনন্দ হলো সকালবেলা উঠে গোসল সেরে নতুন জামা পরে ছোট-বড় সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করা। সকালবেলা শুভেচ্ছার সঙ্গে ঈদে মজা করার আনন্দ আমি কখনোই মিস করি না।